আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় পাটীগণিত ও জ্যামিতি
পাটীগণিত ও জ্যামিতি
পাটীগণিত ও জ্যামিতি
গণিতশাস্ত্রের ক্ষেত্রে পাটীগণিত ও জ্যামিতিতে মিশরীয়রা কিছুদুর অগ্রসর হয়েছিল এবং এসব ক্ষেত্রে তাদের মৌলিক অবদানও কিছু কিছু আছে। অবশ্য মিশরীয়দের পাটীগণিত ছিল ব্যবিলনীয় বীজগনিত ও পাটীগণিতের তুলনায় নিকৃষ্ট। তবে মিশরীয়দের অনুসৃত পদ্ধতি কোনো কোনো ক্ষেত্রে ছিল অভিনব।
প্রাচীন মিশরের গণিতচর্চা সম্পর্কে আমরা জানতে পেরেছি কয়েকটা প্রাচীন মিশরীয় পাণ্ডুলিপি বা ‘প্যাপিরাস’ থেকে। মিশরীয়রা নলখাগড়ার ছাল থেকে এক রকম কাগজ তৈরি করতে শিখেছিল, তাকেই বলে প্যাপিরাস। মস্কোয় রক্ষিত ‘মস্কো প্যাপিরাস’ এবং ব্রিটিশ মিউজিয়মে রক্ষিত ‘রাইও প্যাপিরাস’ বা ‘আহমেস্ প্যাপিরাস’ থেকে আমরা মিশরীয় গণিত সম্পর্কে জানতে পেরেছি।
উভয় পাণ্ডুলিপিই ১৫০০ বা ১৭০০ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দের কাছাকাছি সময়ে লিখিত। রাইও প্যাপিরাসের রচয়িতা ‘আহমেস্’ নামক একজন পুরোহিত।মিশরীয়দের অঙ্কপাতন পদ্ধতি ছিল দশমিক অর্থাৎ দশভিত্তিক। তারা এক, দশ, শত, সহস্র প্রভৃতি সংখ্যা নির্দেশ করতে বিভিন্ন প্রতীক ব্যবহার করত। এক, দশ, একশ প্রভৃতির মধ্যবর্তী সংখ্যা লেখার জন্যে একই প্রতীককে বারবার ব্যবহার করা হত।

মিশরীয়দের গুণের প্রক্রিয়া একটু অভিনবই ছিল। তারা গুণ্য ও গুণককে বারবার দ্বিগুণ মিশরীয়রা যোগ, বিয়োগ, গুণ ও ভাগ৷ এই চার প্রক্রিয়ার সাথে পরিচিত ছিল। করে দুই সারিতে লিখত। তারপর গুণ্যের সারি থেকে প্রয়োজন মতো সংখ্যাগুলোকে যোগ করত। মিশরীয়রা ভগ্নাংশের সাথে পরিচিত ছিল, তবে আমাদের মতো অনায়াসে ভগ্নাংশ লিখতে তারা পারত না। একাংশ (অর্থাৎ যেসব ভগ্নাংশের লব ১ সেগুলো) ছাড়া অন্য ভগ্নাংশ তাদের কাছে খুব বেশি অর্থবহ ছিল না।
মিশরীয়রা তাই ভগ্নাংশের জন্যে কতগুলো তালিকা ব্যবহার করত। জ্যামিতিতে মিশরীয়রা যথেষ্ট উন্নতি অর্জন করেছিল। ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, বহুভুজ ও বৃত্তের ক্ষেত্রফল এবং সিলিণ্ডার, পিরামিড প্রভৃতির ঘনফল তারা নির্ণয় করতে পারত।
বৃত্তের পরিধি ও ব্যাসের অনুপাতের প্রায় সঠিক মান তারা বের করতে সক্ষম হয়েছিল। পিরামিডের ওপরের অংশকে কেটে বাদ দিলে যে অংশ থাকে তার নাম ফ্রাটাম। মিশরীয়রা ফ্রাস্টাম-এর আয়তন করতে পারত।
আরও দেখুন :