পারস্য সাম্রাজ্য ও তার ইতিহাস

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় পারস্য সাম্রাজ্য ও তার ইতিহাস

পারস্য সাম্রাজ্য ও তার ইতিহাস

 

পারস্য সাম্রাজ্য ও তার ইতিহাস

 

পারস্য সাম্রাজ্য ও তার ইতিহাস

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীর আগেকার পারসিকদের সম্পর্কে অল্পই জানা যায়। ঐ সময় পর্যন্ত তারা পারস্য উপসাগরের পূর্ব উপকূলে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছিল। উপকূলীয় পর্বতশ্রেণী চাষের পক্ষে বাধাস্বরূপ হলেও পর্বতের পাদদেশ বনজ সম্পদ, সোনা, রূপা,
লোহা, তামা ও সীসা ইত্যাদি ধাতু এবং মার্বেল ইত্যাদি সম্পদে পূর্ণ ছিল। দেশের অভ্যন্তরে গম, যব ইত্যাদির চাষ ও পশুপালনের সুবিধা ছিল।

আমাদের আলোচ্যকালের শুরুতে পারসিকরা কোনো স্বাধীন জাতি ছিল না, এরা ছিল স্বজাতীয় মিডিয়াবসী মেডেসদের অধীন। খ্রিস্টপূর্ব সপ্তম শতাব্দীতে মিডিয়া ছিল এক পরাক্রমশালী রাষ্ট্র। পারসিকদের ভাষা ছিল সংস্কৃত ও ইউরোপীয় ভাষাসমূহের সাথে সম্পর্কিত, যে কারণে তাদের ভারত-ইউরোপীয় ভাষা গোত্রের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য করা হয়।

৫৫৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ‘কাইরাস’ (রাজত্বকাল ৫৫৯-৫২৯ খ্রিঃপূঃ) দক্ষিণ পারসিক গোষ্ঠী দলের রাজা হন এবং পাঁচ বছরের মধ্যে তিনি সমগ্র পারসিক জাতির শাসকে পরিণত হন। অতঃপর মিডিয়ার শেষ রাজা যখন মেসোপটেমিয়ার বিরুদ্ধে অভিযানে রত তখন কাইরাসের নেতৃত্বে পারসিকরা তিন বছর যুদ্ধ করে মিডিয়া জয় করে নেয়। মিডিয়ার প্রভুতে পরিণত হবার পর কাইরাস অনেকগুলো সামরিক অভিযান পরিচালনা করেন।

সর্বমোট কুড়ি বছরের মধ্যে তিনি এক বিশাল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি পারসিক বাহিনীকে পুনর্গঠিত করে অশ্বারোহী বাহিনীকে মূল আক্রমণকারী বাহিনীরূপে গড়ে তোলেন। তবে সামরিক শক্তি ছাড়াও বিজিতদের প্রতি ধৈর্যশীল নীতি অনুসরণও তাঁর সহজ সাফল্যের অন্যতম কারণ। ৫৪৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে কাইরাস আর্মোনিয়া ও কাপাডোসিয়া জয় করেন এবং ৫৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে লিডিয়া জয় করে প্রভূত বৈভবের অধিকারীও হন।

এ বিষয়ে একটি চমকপ্রদ কাহিনী প্রচলিত আছে। পারসিকদের আক্রমণাভিলাষ অনুমান করে লিডিয়ার বিখ্যাত রাজা ক্রিসাস মিশর ও স্পার্টার সঙ্গে জোট বাঁধেন ও সম্ভাব্য যুদ্ধের ফলাফল সম্পর্কে দৈববাণী লাভের মানসে ডেলফির মন্দিরে ধরনা দেন। ঐতিহাসিক হেরোডোটাস-এর বিবরণ অনুযায়ী, ঐ দৈববাণী উত্তর দেয় যে ‘ক্রিসাস’ ‘অবিলম্বে পারসিকদের আক্রমণ করলে তিনি এক বিশাল সৈন্যবাহিনী ধ্বংস করতে সক্ষম হবেন।

ক্রিসাস ধ্বংস করেছিলেন ঠিকই, তবে সেটা ছিল তাঁর নিজেরই বাহিনী। যুদ্ধে তাঁর সেনাবাহিনী পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায় এবং লিডিয়া পারস্য সাম্রাজ্যের অঙ্গরাজ্যে পরিণত হয়। এ সকল বিজয়ের ফলে মেসোপটেমিয়ার চারপাশের প্রায় সকল দেশই কাইরাসের অধীনে চলে আসে। ৫৩৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তিনি ব্যবিলন দখল করে নেন। এবং তারপর দ্রুত সমগ্র ক্যালডীয় সাম্রাজ্য দখল করে নেন। এ বিষয়ে ব্যবিলনের ইহুদী সম্প্রদায় ও অসন্তুষ্ট ক্যালডীয় পুরোহিতরা তাঁর সহায়ক হয়েছিল।

ব্যবিলন দখল করেই কাইরাস এক ফরমান জারি করেছিলেন, যাতে তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে, ব্যবিলনীয় শাসন ব্যবস্থা অপরিবর্তিত থাকবে, তার দেব-দেবতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শিত হবে এবং ব্যবিলনের সমৃদ্ধি সাধন করা হবে। এ থেকে বোঝা যায় যে, কাইরাস শুধু সামরিক নেতা নন, সুদক্ষ রাজনীতিক এবং কূটনীতিকও ছিলেন।। কাইরাস প্যালেস্টাইন এবং ফিনিশিয়ার বিরুদ্ধেও অনুরূপ পন্থায় অভিযান পরিচালনা করেন।

তিনি তাঁর অভিযানের শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যের ওপর জোর দেন এবং জেরুজালেম ও কতগুলো ফিনিশীয় নগরের পুনর্গঠনের জন্যে সাহায্য দানের প্রতিশ্রুতি দেন। কার্যত অবশ্য ফিনিশিয়া ও প্যালেস্টাইন বিজয় মিশর বিজয়ের পথ প্রশস্ত করে, যদিও ৫২৯ খ্রিস্ট-পূর্বাব্দে বর্বরদের হাতে নিহত হবার ফলে তিনি এ কাজ সম্পন্ন করে যেতে পারেননি ।

কাইরাসের পুত্র ক্যামবিসেস (রাজত্বকাল ৫২৯-৫২২ খ্রিঃপূঃ) ৫২৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মিশর জয় করেন এবং পিতার অনুসৃত নরম নীতি পরিহার করে সেখানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। পারস্য সাম্রাজ্য একটি বিশ্বশক্তিতে পরিণত হয়। কিন্তু একই কালে সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বিদ্রোহ শুরু হয় এবং মিশর থেকে ফেরার পথে ক্যামবিসেস আততায়ীর হাতে নিহত হন। অতঃপর অভিজাত শ্রেণী থেকে আগত দারিয়ুস নামক এক ব্যক্তি বিদ্রোহ দমন করে সম্রাট হন।

 

পারস্য সাম্রাজ্য ও তার ইতিহাস

পার্সিপোলিস-এর প্রাসাদের দেওয়ালে খোদাই করা চিত্র : পারস্য সম্রাটের জন্য উপঢৌকন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

প্রথম দারিযুস বা তথাকথিত মহান দারিয়ুস ৫২২-৪৮৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। তাঁর রাজত্বের প্রথম দিক বিদ্রোহ দমনে এবং রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থার উন্নতি সাধনেই ব্যয় হয়। তিনি সমগ্র সাম্রাজ্যকে বহুসংখ্যক সাট্রাপি বা প্রদেশে ভাগ করেন। সাধারণত এক একটি বিজিত রাজ্য একটি পৃথক সাটাপিরূপে গণ্য হত (যথা, মিশর, লিডিয়া ইত্যাদি)। এ সকল প্রদেশের শাসকদের সম্রাট স্বয়ং নিয়োগ করতেন এবং তাদের বলা হত সাট্রাপ।

সাটাপিসমূহকে মুদ্রায় ও ফসলে কর দিতে হত। যেমন, মিশরকে বছরে ১ লাখ ২০ হাজার সৈন্যের উপযুক্ত গম দিতে হত। এসব কর আদায়ের ফলে দারিয়ুসের রাজভাণ্ডার প্রভূত ধনে পূর্ণ হয়ে ওঠে। দারিয়ুস মুদ্রাসংস্কার প্রবর্তন করেন। ইতিহাসে এই প্রথম নানা ধরনের রাজ্য নিয়ে গঠিত এই বিশাল সাম্রাজ্যে একই ধরনের মুদ্রার প্রচলন করা হয়। এটা ছিল ‘দারিক’ নামক এক স্বর্ণমুদ্রা, শুধু সম্রাটই এটা প্রস্তুত করতে পারতেন।

সাটাপরা অবশ্য রূপা ও তামার মুদ্রা তৈরি করতে পারতেন। দরিক-এর প্রবর্তনের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশ ঘটে এবং বাণিজ্যিক ও সামরিক স্বার্থে দারিয়ুস সরকার রাস্তা নির্মাণ ও পথের নিরাপত্তা রক্ষার ব্যবস্থা করেন। এ সময় পারস্য সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থানের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী পথঘাট নির্মিত হয় এবং রাস্তার পাশে পাশে পনের মাইল অন্তর সরাইখানা ও পাহারার ব্যবস্থা হয়।

দারিয়ুস নীল নদ থেকে লোহিত সাগর পর্যন্ত একটি প্রাচীন খালের সংস্কারসাধন করেন ও তাকে সম্পূর্ণ করেন। বিজিত জাতিসমূহের প্রতি দারিয়ুস ধৈর্যশীল নীতি অনুসরণ করতেন। তিনি প্রাচীন মন্দিরসমূহ ও স্থানীয় আচার-বিশ্বাসের পরিপোষকতা করেন এবং মিশরের সাট্রাপকে নির্দেশ দেন স্থানীয় পুরোহিতদের সাথে আলোচনাপূর্বক মিশরীয় আইনকে সূত্রবদ্ধ করার জন্যে।

দারিয়ুস সামরিক সংস্কারের প্রবর্তন করেন। বিভিন্ন সাট্রাপিতে স্থায়ী সামরিক বাহিনী স্থাপন করা হয় এবং সমগ্র সাম্রাজ্যকে সাট্রাপি-নির্বিশেষে পাঁচটি সামরিক অঞ্চলে ভাগ করা হয়। সামরিক অঞ্চলসমূহের সেনাপতিরা সম্রাটের প্রত্যক্ষ অধীনে ছিলেন। দারিয়ুস তাঁর ক্ষমতার বাইরে গিয়ে সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখেন। তিনি হেলেপন্ট (দার্দানেলিস) অতিক্রম করে থ্রেসীয় উপকূলের এক বড় অংশ জয় করে নেন এবং এ কারণে এথেনীয়দের বিরাগভাজন হন।

এ ছাড়া তিনি এশিয়া মাইনরের উপকূলে আয়োনীয় গ্রীসীয়দের ওপর উৎপীড়নের মাত্রা বাড়িয়ে দেন (এরা লিডিয়ার পতনের ফলে পারসিকদের অধীনে এসেছিল)। এদের উপর দারিয়ুস করের বোঝা বাড়িয়ে দেন, তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যে হস্তক্ষেপ করেন ও নিজ সেনাবাহিনীতে ভর্তি হতে তাদের বাধ্য করেন। এর আশু ফলস্বরূপ আয়োনীয় নগরসমূহে বিদ্রোহ উপস্থিত হয়, এথেন্স তাতে সাহায্য করে।

বিদ্রোহে সহায়তা করার জন্যে দারিয়ুস এথেনীয়দের শাস্তি দিতে উদ্যত হলে তিনি প্রায় সমস্ত গ্রীক নগররাষ্ট্রসমূহের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। গ্রীসীয়-পারসিক যুদ্ধ চলাকালেই দারিয়ুস-এর জীবনাবসান ঘটে। দারিয়ুসের পরে প্রথম জারেক্সেস ও আর্টাজারেক্সেস নিষ্ফলভাবে এ যুদ্ধ চালিয়ে যান। ৪৭৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যেই পারসিকরা প্রায় সমগ্র গ্রীস থেকে বিতাড়িত হয়।

অতঃপর পারসিকরা সাময়িকভাবে আয়োনীয় দ্বীপমালা করায়ত্ত করতে এবং এশীয় ভূখণ্ডে এক বৃহৎ শক্তি হিসেবে টিকে থাকতে সক্ষম হয়; কিন্তু ইউরোপীয় ভূখণ্ডে তাদের আধিপত্য বিস্তারের প্রচেষ্টার এখানেই পরিসমাপ্তি ঘটে। পারস্য সাম্রাজ্যের শেষ দেড় শতাব্দীর ইতিহাস রাজহত্যা, প্রাদেশিক শাসকদের বিদ্রোহ ও বর্বর আক্রমণের কাহিনীতে ভরপুর।

অবশেষে ৩৩০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে গ্রীক বীর দিগ্বিজয়ী আলেকজাণ্ডার পারস্য সাম্রাজ্যের স্বাধীন অস্তিত্ব ধ্বংস করলে এ প্রাচীন সভ্যতার অবসান ঘটে। পারস্য পার রানের পরবর্তী ইতিহাস খুব তাৎপর্যপূর্ণ না হলেও বর্ণনার যোগ্য। গ্রীসীয় রাজবংশ ৫০০ থেকে ২৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত ইরান শাসন করে। এর অল্পকাল পরেই পহব বা পার্থিয়ানদের এক রাজবংশ (আরদাসেস বংশীয়) উত্তর-পূর্ব ইরানে ক্ষমতায় আসে।

২২৬ খ্রিস্টাব্দে সাসানী রাজবংশের রাজা ‘প্রথম আরদাশির’ শেষ পার্থিয়ান রাজাকে পরাজিত করে ইরানের রাজা হন। ৬৫২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এ রাজবংশ ইরানের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত থাকে। এ সময়ের মধ্যে তাঁরা রোম ও বাইজেন্টাইনের বিরুদ্ধে এবং হুন, মঙ্গোল ও তুর্কিদের বিরুদ্ধে বিরামহীন যুদ্ধ-বিগ্রহে ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু সিরিয়া, এশিয়া মাইনর, মেসোপটেমিয়া ইত্যাদি অঞ্চল অধিকারের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

৬৫২ খ্রিস্টাব্দে আরবদের কাছে পরাজিত হবার ফলে সাসানী রাজবংশের পতন ঘটে। পারস্য সাম্রাজ্যের নানাবিধ ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও নিকট প্রাচ্যের অন্যান্য অধিকাংশ সভ্যতার তুলনায় এর স্থান অনেক উচ্চে ছিল। পারস্য সভ্যতা আসিরীয় সভ্যতার মতো সন্ত্রাসমূলক ছিল না। বিজিত রাজ্যসমূহের ওপর করের বোঝা আরোপ করলেও পারসিকরা তাদের আচার, সংস্কৃতি, ধর্ম, আইন ইত্যাদি বজায় রাখতে দিত।

বস্তুত পারস্য সাম্রাজ্যের প্রধান গুরুত্ব এইখানে যে, এটা নিকট প্রাচ্যের বিভিন্ন সংস্কৃতি, যথা॥ পারস্য, মেসোপটেমিয়া, এশিয়া, মাইনর, সিরিয়া-প্যালেস্টাইন উপকূল ও মিশরের সংস্কৃতির মিলন এবং সংমিশ্রণ ঘটার সুযোগ সৃষ্টি করেছিল। তত্ত্বগতভাবে পারস্য সম্রাট নিজেকে আলোর দেবতার বরপ্রাপ্ত স্বৈরাচারী নৃপতি হিসেবে জাহির করতেন। বাস্তবে অবশ্য তাঁকে অভিজাতদের ও সাট্রাপদের পরামর্শমত চলতে হত এবং মেডেস ও পারসিকদের প্রাচীন আইনের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হত।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

পারস্য সম্রাটরা বিজিত রাজ্যের অভিজাত নেতাদের উচ্চ রাজপদে আসীন করতেন। সাম্রাজ্যের অখণ্ডতা রক্ষার জন্যে পারস্য সম্রাটরা চমৎকার রাস্তাঘাট নির্মাণ করেছিলেন, একথা আগেই বলা হয়েছে। সবচেয়ে প্রশস্ত ‘রাজপথ’টি ছিল ১৬০০ মাইল লম্বা, এটি ছিল পারস্য উপসাগরের নিকটবর্তী ‘সূসা’ থেকে এশিয়া মাইনরের উপকূলবর্তী ‘ইফেসাস্’ পর্যন্ত বিস্তৃত।

এ পথটি এত সুরক্ষিত ও সুসংরক্ষিত ছিল যে, সম্রাটের বার্তাবহ দিনরাত চলে এক সপ্তাহের কম সময়ে এ সুদীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে পারত। অন্যান্য রাজপথ বিভিন্ন প্রদেশের সাথে পারস্যের চারটি রাজধানী সুসা, পার্সিপোলিস, ব্যবিলন ও একবাটানার সংযোগ সাধন করেছিল।

আরও দেখুন :

Leave a Comment