বর্ণমালার আবিষ্কার

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় বর্ণমালার আবিষ্কার

বর্ণমালার আবিষ্কার

 

বর্ণমালার আবিষ্কার

 

বর্ণমালার আবিষ্কার

ফিনিশীয় সংস্কৃতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান হচ্ছে বর্ণমালার আবিষ্কার ও তার ব্যাপক প্রচলন। সম্ভবত ১২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের সমকালে এ আবিষ্কার সংঘটিত হয়। ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার এবং দ্রুত ও ঘন ঘন হিসাব ও দলিলপত্র প্রণয়নের আবশ্যকতাই ফিনিশীয় বর্ণমালা আবিষ্কারের অনুকূল সামাজিক পটভূমি রচনা করেছিল বলে পণ্ডিতরা মনে করেন।

আমরা জানি, অনুরূপ সামাজিক কারণেই ইতিপূর্বে মিশর ও ব্যবিলনিয়ায় লেখন পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছিল, কিন্তু তা ছিল চিত্রলিপি পর্যায়ের। ফিনিশীয়রা দূর-দূরান্তের স্বল্পমূল্যের জনপ্রিয় দ্রব্যাদি ক্রয়-বিক্রয় করত। এসব ছোট ছোট জিনিসের খুচরা বিক্রির হিসাব রাখতে হত বণিকদের নিজেদেরই এবং এ কাজটা ছিল পুরোহিততন্ত্রের অল্প ধরনের বৃহৎসংখ্যক জিনিসের হিসাব রাখার চেয়ে ভিন্নতর।

ফলে ফিনিশীয়দের কালে অল্পসংখ্যক চিহ্নরাশির সাহায্যে বহু সংখ্যক জিনিসের হিসাব রাখার ব্যবস্থাটা অর্থনৈতিক বিকাশের পূর্বশর্ত রূপে দেখা দিয়েছিল।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

এ পরিস্থিতিতে ফিনিশীয়গণ কিউনিফর্ম ও হায়ারোগ্লিফ লিপির ভিত্তিতে ২২টি ব্যঞ্জনবর্ণের এক বর্ণমালার সৃষ্টি করে। এতে একটিও স্বরবর্ণ ছিল না। পরবর্তীকালে গ্রীসীয়গণ ১০০০ থেকে ৭০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে ফিনিশীয়দের কাছ থেকে এ বিষয়ে জ্ঞানার্জন করে।

তারা পূর্বোক্ত বর্ণমালায় স্বরবর্ণ সংযোজন করে তার উন্নতি সাধন করে। পরবর্তীকালে এটুস্কান ও রোমকগণ ইটালির গ্রীসীয়দের কাছ থেকে এ বিষয়ে জ্ঞানলাভ করে এবং ক্রমে প্রায় সমগ্র সভ্যজগতে বর্ণমালাভিত্তিক লেখন পদ্ধতির প্রচলন ঘটে। চিত্রলিপির সাথে বর্ণমালাভিত্তিক লিপির পার্থক্য এখানে যে, বর্ণমালার এক-একটি অক্ষর মানুষের কণ্ঠ দিয়ে উচ্চারিত এক-একটি ধ্বনির প্রতীক রূপে কাজ করে।

 

বর্ণমালার আবিষ্কার

 

বর্ণমালা সৃষ্টির ফলে মানুষ চিত্রলিপির প্রতীকধর্মিতার গণ্ডি ছাড়িয়ে বিমূর্ত চিন্তার প্রসার ঘটাতে সক্ষম হল। তদুপরি, হায়ারোগ্লিফিক লিপিতে লেখাপড়ার কাজটা ছিল কঠিন, তাই তা ছিল পুরোহিতদের একচেটিয়া অধিকারের অন্তর্ভুক্ত। স্বল্পসংখ্যক অক্ষরবিশিষ্ট বর্ণমালার আবিষ্কারের ফলে লেখাপড়ার কাজটা সহজ হল এবং সভ্যতার ব্যাপকতর বিস্তার সম্ভব হল।

আরও দেখুন :

Leave a Comment