মার্ক্সবাদী ধারা

আজকের আলোচনার বিষয় মার্ক্সবাদী ধারা – যা  অর্থনৈতিক নৃবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু এর অর্ন্তভুক্ত, প্রথাবাদী-বাস্তববাদী এই বিতর্কের বাইরে মার্ক্সবাদী ধারা বরাবরই স্বতন্ত্র অবস্থান নিয়ে থেকেছে। মার্ক্সবাদী চিন্তায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে উৎপাদন পদ্ধতি (mode of production)। পুঁজিবাদী এবং প্রাক্-পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থাকে সমন্বিত করে ভাবা হয়।

মার্ক্সবাদী ধারা

 

মার্ক্সবাদী ধারা

 

উৎপাদন পদ্ধতি কেন্দ্রিক এই চিন্তাভাবনা নয়া ধ্রুপদী অর্থনৈতিক তত্ত্বের কিছু বিষয় স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করে। যেমন, সেসব তত্ত্বে উৎপাদন, বণ্টন এবং ভোগ যেভাবে বিভাজিত মার্ক্সবাদী চিন্তায় এই রকম বিভাজিত করে ভাবা হয় না। বরং এই চিন্তায় উৎপাদনের প্রক্রিয়ায় যা কিছু উপাদান আছে – ভূমি, যন্ত্রপাতি এবং আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র, পুঁজি, দক্ষতা ইত্যাদি – সবগুলোকে একত্রে উৎপাদনের উপায় হিসেবে বোঝা হয়ে থাকে। এই উৎপাদনের উপায়ের উপর দখল, এর মালিকানা বা নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি সমাজের মানুষজনের মধ্যে বিভিন্ন ভাবে থাকে, আর সেটা একটা অসম ব্যবস্থা। তাকে বোঝা হয় উৎপাদনের সামাজিক সম্পর্ক হিসেবে।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

উৎপাদনের উপায় এবং উৎপাদনের সামাজিক সম্পর্ক একত্রে মিলেই কোন সমাজের সমগ্র সমাজ-আর্থনীতিক গঠন তৈরি করে থাকে। ফলে মার্ক্সবাদী চিন্তা অনুযায়ী এই বিশ্লেষণের রাস্তাতেই প্রাক্-পুঁজিবাদী কিংবা পুঁজিবাদী সমাজ বিশ্লেষণ করা সম্ভব। এক্ষেত্রে প্রধান পার্থক্য সূচিত হবে উৎপাদনের উপায়ের উপর।

 

মার্ক্সবাদী ধারা

 

মার্ক্সবাদী বিশ্লেষণের একটা প্রধান জায়গা হচ্ছে শ্রম। এই চিন্তাটাই অন্যান্য বিশ্লেষণ পদ্ধতি থেকে মার্ক্সবাদকে স্বতন্ত্র করেছে। শ্রমের প্রসঙ্গের সাথেই সেখানে চলে আসে ক্ষমতার প্রসঙ্গ। এর মানে হ’ল: কোন সমাজে শ্রম কিভাবে মূল্যে রূপান্তরিত হয় এবং সেই মূল্যটা সমাজের কারা দখল করবার সামর্থ্য বা ক্ষমতা রাখে। এই প্রশ্নটা একটা রাজনৈতিক প্রশ্ন। ফলে মার্ক্সবাদী অর্থনৈতিক নৃবিজ্ঞানকে বুঝতে চাইলে রাজনৈতিক উপলব্ধি থাকা প্রয়োজন। উৎপাদনের প্রক্রিয়ায় যাঁরা শ্রম প্রদান করেন তাঁদেরকে বিশ্লেষণের কেন্দ্রে নিয়ে আসা মার্ক্সবাদী চিন্তার একটা মৌলিক জায়গা বলে বিবেচিত হতে পারে।

Leave a Comment