মৌর্য সাম্রাজ্যের পতন

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় মৌর্য সাম্রাজ্যের পতন

মৌর্য সাম্রাজ্যের পতন

 

মৌর্য সাম্রাজ্যের পতন

 

মৌর্য সাম্রাজ্যের পতন

অশোক যে বিশাল সাম্রাজ্য স্থাপন করেছিলেন, তা স্থায়ী হয়নি। অশোকের মৃত্যুর পর তার বংশধরদের মধ্যে রাজ্যের ভাগাভাগি নিয়ে কলহ শুরু হয়। তাঁর এক ছেলে কাশ্মীরে স্বাধীন রাজ্য স্থাপন করেন, আরেক ছেলে মগধ অধিকার করে বসেন। মগধে পরপর সাতজন রাজা রাজত্ব করেন কিন্তু কেউই উপযুক্ত ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত ব্রাহ্মণ সেনাপতি পুষ্যমিত্র সুঙ্গ শেষ মৌর্যরাজা বৃহদ্রযকে হত্যা করে মগধের সিংহাসনে বসেন।

কোনো কোনো ঐতিহাসিক বলেন যে, অশোকের বৌদ্ধধর্ম প্রচারের ফলে ব্রাহ্মণ সম্প্রদায় খুব অসন্তুষ্ট হয়ে ওঠে এবং সে আক্রোশে বিপ্লব ঘটায়। আর পার্থিয়া ছিল পারস্যের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। পার্থিয়া হল পার্থিয়ান বা পারদদের আদি বাসস্থান। পার্থিয়ানদের বাংলায় পহব বলা হয়ে থাকে। শক্রা থাকত মধ্য এশিয়ায়, সেখান থেকে তারা অবশ্য একবার বিতাড়িত হয়েছিল। গ্রীক ভাষায় শকদের নাম দেওয়া হয়েছে সিদিয়ান।

এ সব বিদেশি জাতি সকলেই ভারতবর্ষের উত্তর-পশ্চিম দ্বার দিয়ে প্রবেশ করে এবং বিভিন্নস্থানে রাজ্য স্থাপন করে। প্রথমে ব্যাকট্রিয়ান গ্রীকরাই ভারতের সীমান্ত আক্রমণ করে এবং পাঞ্জাব ও সিন্ধু অধিকার করে। দুজন গ্রীক রাজা ভারতের মধ্যে অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। একজনের নাম ডিমিট্রিয়স। ইনি পাটলীপুত্র পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছিলেন। আরেকজনের নাম মিনান্দার।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

তাঁর রাজধানী ছিল সাকল (বর্তমান সিয়ালকোট)। মিনান্দার বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। বস্তুত, গ্রীকরা ক্রমশ ভারতীয় সমাজের সংস্পর্শে এসে ভারতীয় ধর্ম ও আচার গ্রহণ করতে শুরু করেছিল। গ্রীকদের অধিকার বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। নিজেদের মধ্যে বিবাদের ফলে গ্রীক রাজ্য নষ্ট হয়ে যায়।

শকরা দুই দলে ভারতে প্রবেশ করে এবং এক দল উত্তর ভারতে ও অপর দল দক্ষিণে রাজ্য স্থাপন করে। উত্তরে শকরা মথুরা, তক্ষশীলা প্রভৃতি জায়গায় বসবাস করে এবং সেখানকার শকরা ক্ষত্রপ ও মহাক্ষত্রপ উপাধি নিয়ে রাজত্ব করেন। কালক্রমে শকরা ভারতীয় আচার গ্রহণ করে একেবারে এদেশী হয়ে যায় এবং বৌদ্ধ বা হিন্দুধর্ম গ্রহণ করে। শকদের একটি শাখা পশ্চিম ভারতে প্রবল হয়।

 

মৌর্য সাম্রাজ্যের পতন

 

আরেকটি শাখা গুজরাট ও মহারাষ্ট্রে রাজত্ব স্থাপন করে। কিছুকাল পরে আরেক দল শক উজ্জয়িনীতে একটি রাজবংশ স্থাপন করে। উজ্জয়িনীর শকরা প্রায় তিনশ’ বছর রাজত্ব করেন। মহাক্ষত্রপ স্বামী রুদ্রদামন ছিলেন এ বংশের প্রধান রাজা। উত্তর ভারতের শকদের সঙ্গে পহ্লব বা পারদ জাতিও ভারত সীমান্তে অধিকার স্থাপন করে। এ বংশের রাজাদের মধ্যে খ্রিষ্টীয় প্রথম শতকের গণ্ডোফারনিস্-এর নাম বিখ্যাত। কাবুল, কান্দাহার ও তক্ষশীলা তাঁর রাজ্যভুক্ত ছিল।

আরও দেখুন :

Leave a Comment