আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় রোমান সভ্যতার ধর্ম। রোমীয়গণ তাদের প্রথাগত বর্ণনা সে অলৌকিক বা অতিপ্রাকৃত উপাদান যাই হোক ঐতিহাসিক হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। তাদের গল্পগুলো প্রায়শই রাজনীতি ও নৈতিকতা এবং সম্প্রদায় বা রোমান রাজ্যের প্রতি ব্যক্তির দায়িত্ব সম্পর্কিত। বীরত্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ থিম। গল্পগুলোতে রোমান ধর্মীয় চর্চা প্রতিফলিত হয় যা ধর্মতত্ত্ব বা কসমোজেনির তুলনায় আচার, পালন এবং প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্কিত।
রোম এর প্রাকইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় ইতালীয় উপদ্বীপে গ্রীক ধর্মের ব্যাপক প্রভাব থাকায় রোমান ধর্ম ও পৌরাণিক কাহিনী অধ্যায়ন বেশ জটিল এবং পরবর্তীতে রোমান লেখকগণ গ্রীক সাহিত্য মডেল অনুকরণ কর শিল্পকর্ম তৈরী করে। ধর্মতত্ত্বের ক্ষেত্রে রোমানুণ গ্রীকদের মত নিজেদের দেবতার পরিচয় নির্ধারণে উৎসাহী ছিলো এবং তারা গ্রিক দেবতার গল্পগুলো নিজেদের দেবতাদের নামে অনুবাদ করে।[২] রোমের প্রথমদিকের কাল্পনিক এবং পৌরাণিক কাহিনীর সঙ্গে এট্রুসক্যান ধর্মের গতিশীল সম্পর্ক ছিলো কিন্তু গ্রীকদের চেয়ে কম নথিভুক্ত হয়েছে।
রোমান সভ্যতার ধর্ম
রোমান ধর্মের আনুষ্ঠানিকতা এবং গ্রীক ধর্মে পৌরাণিক কাহিনী কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করতো তাই অনেকসময় স্থানীয় পুরাণের উপর রোমানদের অধিকার বেশি বলে সন্দেহ হয়। এটা রোমান্টিকতার পণ্য এবন ১৯ শতকের শাস্ত্রীয় বৃত্তি গ্রীক সভ্যতাকে অধিক “প্রকৃত সৃজনশীল” হিসেবে মূল্যায়িত করেছে। রেনেসাঁ থেকে ১৮ শতক পর্যন্ত রোমান মিথ ছিলো অনুপ্রেরণার উৎস বিশেষ করে ইউরোপীয় চিত্রশিল্পের। রোমান ঐতিহ্য ঐতিহাসিক পুরাণ বা কিংবদন্তি, শহরের পত্তন এবং সমৃদ্ধি নিয়ে সমৃদ্ধ। এসব বর্ণনায় মানব চরিত্রের ব্যাখ্যা করা হয়েছে যারা মাঝে মাঝে দেবতার নিকট হতে সাহায্য পেতো কিন্তু স্বর্গীয় নির্ধারিত ভাগ্যে এগিয়ে যায়। রোমের প্রাক পর্বে ইতিহাস এবং পুরাণের মধ্যে পারষ্পরিক এবং পরিপূরক সম্পর্ক ছিলো।
রোমান সভ্যতার ধর্ম
প্রজাতন্ত্রের যুগেই রোমের-ধর্ম পুরোপুরি রূপ পরিগ্রহ করে। রোমের-ধর্ম বহুলাংশে গ্রীকদের মতো। গ্রীকধর্মের মতো রোমান ধর্মের পশ্চাতে কোনো ভাবাদর্শ নেই। প্রকৃতির বিভিন্ন শক্তিকে তারা দেবদেবীরূপে পূজা করত। তবে তাদের আরাধ্য দেবদেবীগণের আকৃতি ও প্রকৃতি সাধারণ মানুষেরই অনুরূপ।
মানুষের মতোই তাদের কার্যকলাপ আবেগ ও অনুভূতিতে পরিপূর্ণ। আকাশের দেবতা জুপিটার, জ্ঞানের দেবী মিনার্ভা, প্রেমের দেবী ভেনাস, সমুদ্রের দেবতা নেপচুন— এঁরা হলেন রোমের দেবদেবীদের প্রধান। এঁদের সকলের উদ্দেশ্যে ভিন্ন ভিন্ন দেবমন্দির নির্মাণ করা হত।

এ সকল দেবতার কাজ ছিল রাষ্ট্রকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করে শক্তি বৃদ্ধি করা। রোমের-ধর্মমন্দিরগুলিতে পুরোহিতগণ দেবতাদের উদ্দেশ্যে পূজা-অর্চনা করতেন এবং যজ্ঞ ও অন্যান্য অনুষ্ঠানপর্ব সম্পন্ন করতেন।
আরও দেখুন :