আজকের আলোচনার বিষয় অ-ইউরোপীয় সমাজের পরিবার -তত্ত্ব অধ্যায়ের সারাংশ – যা পরিবার ও গৃহস্থালী এর অর্ন্তভুক্ত, ‘পাশ্চাত্য সমাজ” একটি প্রত্যয়। প্রত্যয় বলা হচ্ছে এই কারণে যে, এটি মৌলিক কিছু অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক গঠনকে বুঝতে সাহায্য করে। এই গঠন বিগত চার শতকের ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ায় বিকশিত হয়েছে। এই গঠন সমরূপ নয়। জাতিভিত্তিক (উদাহরণস্বরূপ, ইংরেজ, জার্মান), ধর্মীয় (উদাহরণ স্বরূপ, ক্যাথলিক, প্রটেস্টান্ট), ভাষাগত (উদাহরণস্বরূপ, ফরাসী, ডেনিশ) এবং সাংস্কৃতিক (উদাহরণস্বরূপ, উত্তর বা দক্ষিণ ইউরোপ) ভিন্নতা রয়েছে ।
অ-ইউরোপীয় সমাজের পরিবার
বিভিন্ন অঞ্চলের আছে নির্দিষ্ট ইতিহাস; অঞ্চলের ভিতরে, এবং অপর অঞ্চলের সাথে, রয়েছে দ্বন্দ্ব-সংঘাতের সম্পর্ক। ভিন্নতা এবং নানান ধরনের জটিলতা সত্ত্বেও পাশ্চাত্য সমাজগুলো গুরুত্বপূর্ণ দিক দিয়ে একীভূত: আলোকময়তা, পুঁজিবাদ, যৌক্তিকতা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, খ্রিস্টীয় ঐতিহ্য এবং ধর্ম-নিরপেক্ষতা। বর্তমান বিশ্বে ক্ষমতার যে সম্পর্ক বিরাজমান, তার প্রেক্ষিতে পাশ্চাত্য ও অ-পাশ্চাত্য সমাজের দ্বিবিভাজন অর্থবহ। নৃবিজ্ঞানী তালাল আসাদ এবং আরো অনেকে, এই যুক্তি দাঁড় করান।
অ-পাশ্চাত্য সমাজের যে বৈচিত্র্য ও ভিন্নতা (জাতিভিত্তিক, ভাষাগত, সাংস্কৃতিক ইত্যাদি) পুঁজিবাদ ও পাশ্চাত্য আধিপত্যের বিস্তার তাকে একই সাথে ধ্বংস করেছে এবং পুনরায় গঠিত করেছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। ধ্বংস এবং পুনর্গঠনের এই প্রক্রিয়া অ-পাশ্চাত্য সমাজের সংস্কৃতিগুলোকে সমরূপ করে তুলছে, আবার একইসাথে নতুন নতুন ভিন্নতা ও বিভাজন সৃষ্টি করছে।
পরিবার প্রসঙ্গে ফিরে আসা যাক । নীচে ঘানার মাতৃসূত্রীয় আশান্টি জাতির একটি কেস স্টাডি উপস্থাপন করা হল। আশান্টি পরিবার মাতৃসূত্রীয়। বিয়ের পর স্বামী এবং স্ত্রী সংসার গড়েন না; তারা বিয়ের পূর্বে যেভাবে নিজ-নিজ মাতৃসূত্রীয় পরিবারে থাকতেন, বিয়ের পরও সেভাবে থাকেন। স্বামী এবং স্ত্রীর এই পৃথক বসবাস স্বল্পকালীন কিছু নয় বরং আজীবনের। খুব স্পষ্টতই আশান্তি সমাজের পরিবার গঠন প্রথা পাশ্চাত্য সমাজের পরিবারের মডেল থেকে খুব ভিন্ন। উপরন্তু, এটি পাশ্চাত্য নৃবিজ্ঞানীদের তৈরি করা পরিবারের বিশ্বজনীন সংজ্ঞা এবং আকর বৈশিষ্ট্যকে চ্যালেঞ্জ করে।
আরও দেখুনঃ