আজকের আলোচনার বিষয় কেস স্টাডি: দারিদ্র্যকে মোকাবেলা করার একটি কৌশল হচ্ছে নারী-কেন্দ্রিক পরিবার – যা বর্ণবাদের সম্পর্ক এর অর্ন্তভুক্ত, দারিদ্র্যের কারণে গৃহস্থালী গঠন সহজ নয়। চাকরির বাজার, সরকারের দেয়া কল্যাণ-ভাতার বিবিধ নিয়মাবলী, এবং বস্তি স্থাপনের মধ্য দিয়ে গরিবদের পৃথক করে দেয়ার যে প্রকল্প এগুলো গরিব গৃহস্থালী গঠনকে অস্থিতিশীল করে দেয়ার শর্ত হিসেবে কাজ করে।
নিজে বেঁচে থাকার জন্য, এবং সন্তানদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য, যে টাকা-পয়সা প্রয়োজন তা গরিবদের নেই। সেকারণে তারা জীবন-সংগ্রামকে মোকাবেলা করে সম্পদ ভাগভাগি করে, জীবন-যাপনের ঝুঁকিগুলোকে ভাগাভাগি করে। খাবার-দাবার, আসবাবপত্র, পোশাক, যন্ত্রপাতি, সন্তান এবং নগদ টাকা – এসবই এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তি, এক গৃহস্থালী থেকে আরেক গৃহস্থালী, এর মধ্যে ঘুরতে থাকে। যে যখন যা পারে সেটা দেয়, এবং যখন যা লাগে, সেটা নেয়।
কেস স্টাডি: দারিদ্র্যকে মোকাবেলা করার একটি কৌশল হচ্ছে নারী-কেন্দ্রিক পরিবার
সুনির্দিষ্ট গৃহস্থালীর পরিবর্তে দেখা যায় “গৃহী জাল” (domestic network)। এই গৃহী জাল হচ্ছে মানুষের দল। দলে কে কখন থাকবে, তার বাঁধা-ধরা নিয়ম নেই। এই দলগুলো সম্পদ জড়ো করে এবং সম্পদের ভাগাভাগি করে পরস্পরকে সাহায্য করে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনা প্রয়োজন অনুসারে একত্রে বাস করে। নতুন পরিস্থিতির উদ্ভব হলে, কেউ কেউ অন্যত্র চলে যায়। দারিদ্র্য এতোই প্রগাঢ় যে বেঁচে থাকার চাহিদা মেটানো কঠিন। কঠিন দারিদ্র্য জন্ম দেয় গৃহী জালের । এই জালগুলো পরিবারের ধারণাকে ঘিরে গড়ে ওঠে।
পরিবার এবং গৃহস্থালী হচ্ছে নারী-কেন্দ্রিক। গরিব কৃষ্ণাঙ্গ নারীরা, সম্পর্কে আত্মীয় বা বন্ধু, এমন নারীর সাথে সীমিত সম্পদ এবং সন্তান লালন-পালনের দায়ভার ভাগাভাগি করেন। স্পষ্টতই, গরীব কৃষ্ণাঙ্গ সন্তান শ্বেতাঙ্গ মধ্যবিত্ত সন্তানদের মতন বিচ্ছিন্ন অণু পরিবারে বেড়ে ওঠে না। অধিকাংশ গৃহস্থালী গঠিত হয় জৈবিক মাকে কেন্দ্র করে। সন্তানদের দেখ-ভাল করা হচ্ছে গড়ে ওঠা গৃহী জালগুলোর প্রধান লক্ষ্য।
পুরুষদের সাথে শিশুদের আবেগ-ভালবাসার দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক যদিও উৎসাহিত করা হয়, কিন্তু গড়ে ওঠা বৃহৎ পরিবারের কেন্দ্রে থাকেন নারী। এই নারী-কেন্দ্রিক আকর সম্পাদন করে আর্থিক কাজ; এরা সম্পদের ভাগা-ভাগি করে থাকেন। পুরুষরাও সন্তানদের লালন-পালন করেন।
নারীদের মতনই, তারা যখন যা পারে তা দেয়। কিছু কিছু পুরুষ ভাগাভাগিতে অংশগ্রহণ করেন না, আবার অনেকে আছেন যারা একই সাথে বোনের ঘরে, মা অথবা আন্টিকে, অথবা স্ত্রী কিংবা প্রেমিকার সংসারে কিছু কিছু দিয়ে থাকেন। একটি নির্দিষ্ট ছাদের তলায় থাকলেও, তারা হয়ত একাধিক সংসারের মানুষজনের খেয়াল রাখে। পারিবারিক পর্যায়ে পারস্পরিক নির্ভরশীলতার এ ধারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রচলিত প্রধান ধারার বিপরীত। প্রধান ধারার প্রতিনিধিত্ব করে শ্বেতাঙ্গ পরিবার যেখানে রয়েছে দম্পতি-ভিত্তিক অণু পরিবার (বাবা-মা এবং তাদের শিশু সন্তান)।
আরও দেখুনঃ