নৃতাত্ত্বিক তত্ত্ব | নৃবিজ্ঞান

নৃতাত্ত্বিক তত্ত্ব ক্লাসটি নিয়েছেন প্রফেসর এ. কে. এম. মাজহারুল ইসলাম।

 

নৃতাত্ত্বিক তত্ত্ব

 

প্রত্নতাত্ত্বিক নৃবিজ্ঞান

প্রত্নতাত্ত্বিক নৃবিজ্ঞান হলো অতীতের মানুষ ও তার সমাজ সংস্কৃতি নিয়ে অনুসন্ধান ও গবেষণার ক্ষেত্র। নৃবিজ্ঞানের এই শাখায় মানুষের পূর্বসূরী ও মানব-সদৃশ প্রাণীর জীবাশ্মের নিদর্শন এবং সেইসব মানুষ ও মানব-সদৃশ প্রাণী গোষ্ঠীর জীবন যাপনে ব্যবহৃত প্রাকৃতিক ও সামাজিক বস্তুসামগ্রী গুরুত্বসহকারে পর্যালোচনা করা। এই ক্ষেত্রের উল্লেখযোগ্য দিক হলো প্রাগৈতিহাসিক সংস্কৃতির সাথে বর্তমানের সেতুবন্ধন।

 

নৃতাত্ত্বিক তত্ত্ব
প্রত্নতত্ত্ব নৃবিজ্ঞান

 

ভাষাতাত্ত্বিক নৃবিজ্ঞান

নৃবিজ্ঞানের অন্যতম প্রধান শাখা হল দৈহিক নৃবিজ্ঞান। দৈহিক নৃবিজ্ঞানের একটি উপশাখায় পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাব ও পরবর্তীকালে তাদের শারীরিক বিবর্তন নিয়ে আলোচনা করা হয়; এই ক্ষেত্রটি মনুষ্য জীবাশ্মবিজ্ঞান নামে পরিচিত। দৈহিক নৃবিজ্ঞানের আরেকটি উপশাখায় বর্তমান মনুষ্য সমাজগুলির মধ্যকার দৈহিক বৈচিত্র্যের প্রকৃতি ও কারণ আলোচনা করা হয়; এই ক্ষেত্রটি মনুষ্য বৈচিত্র্য নামে পরিচিত।

নৃবিজ্ঞানের দ্বিতীয় প্রধান শাখা হল সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান। সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান আবার তিনটি উপশাখায় বিভক্ত—প্রত্নবিজ্ঞান, নৃতাত্ত্বিক ভাষাবিজ্ঞান ও জাতিবিজ্ঞান। এই তিনটি উপশাখাই মানুষের সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করে। এগুলি থেকে কোন নির্দিষ্ট সমাজের চিন্তাধারা ও আচরণের রীতিনীতি বুঝতে পারা যায়।

প্রত্নবিজ্ঞানীরা প্রাগৈতিহাসিক মানুষদের দৈনন্দিন জীবন এবং রীতিনীতি তাত্ত্বিকভাবে পুনর্গঠন করতে চেষ্টা করেন। এছাড়াও তারা সাংস্কৃতিক পরিবর্তন অনুসরণ করেন এবং এই পরিবর্তনগুলি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন। তারা পুরাতন মনুষ্য সংস্কৃতিগুলির অবশেষ থেকে ইতিহাস পুনর্নির্মাণের চেষ্টা চালান।

নৃতাত্ত্বিক ভাষাবিজ্ঞানীদের একাংশ ভাষার আবির্ভাব এবং সময়ের সাথে ভাষার বিস্তার নিয়ে আগ্রহী; এই ক্ষেত্রটি ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান নামে পরিচিত। তারা সমকালিক ভাষাগুলি কীভাবে একে অপরের থেকে আলাদা, তা নিয়েও গবেষণা করেন; এই গবেষণা বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের আওতায় পড়ে। এছাড়াও তারা সমাজে ভাষার প্রকৃত প্রয়োগ নিয়েও আগ্রহী; এই ক্ষেত্রটির নাম দেওয়া হয়েছে সমাজভাষাবিজ্ঞান।

বর্তমান ও নিকট অতীতের জাতিগুলির রীতিনীতি, চিন্তাভাবনা ও কাজকর্মের মধ্যে কী পার্থক্য আছে এবং কেনই বা এই পার্থক্য হয়, তা জাতিবিজ্ঞানে আলোচিত হয়। জাতিবিজ্ঞানীদের একাংশ জাতিবিবরণে আগ্রহী; একজন জাতিবিবরক কোন একটি সমাজে গিয়ে বছরখানেক বাস করেন, কথা বলেন এবং সেই সমাজের রীতিনীতি পর্যবেক্ষণ করেন। পরবর্তীতে তিনি সামাজিক দলটির একটি পূর্ণাঙ্গ জাতিগত বিবরণ প্রস্তুত করেন। আরেক ধরনের জাতিবিজ্ঞানীর নাম জাতি-ইতিহাসবিদ; এরা লিখিত দলিলপত্র অনুসন্ধান করে সময়ের সাথে কোন একটি নির্দিষ্ট জাতিগত দলের জীবনধারা কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছে, তা নির্ণয় করার চেষ্টা করেন।

তৃতীয় আরেক ধরনের জাতিবিজ্ঞানীকে বলা হয় আন্তঃসাংস্কৃতিক গবেষক; এরা জাতিবিবরক ও জাতিইতিহাসবিদদের উপাত্ত থেকে কিছু সংস্কৃতির নমুনা নেন এবং কোন ধরনের রীতিনীতি সাধারণভাবে সব ধরনের সমাজে প্রযোজ্য, তা আবিষ্কারের চেষ্টা করেন।

নৃবিজ্ঞানের গবেষণা মানুষকে সহিষ্ণু করতে সাহায্য করতে পারে। অন্য জাতির লোক কেন সাংস্কৃতিক ও দৈহিক দিক থেকে আলাদা আচরণ করে, নৃবিজ্ঞান তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেয়। যেসব সাংস্কৃতিক রীতিনীতি ও কাজকর্ম আমাদের কাছে ভুল বা অশোভন মনে হতে পারে, সেগুলি হয়ত বিশেষ পরিবেশগত বা সামাজিক অবস্থার জন্য অভিযোজনের ফসল। এছাড়াও নৃবিজ্ঞানের আরো অনেক শাখা রয়েছে, সেগুলো হলোঃ- স্বাস্থ্য নৃবিজ্ঞান, ব্যবসায় নৃবিজ্ঞান, অর্থনৈতিক নৃবিজ্ঞান প্রভৃতি।

 

ভাষাতত্ত্ব নৃবিজ্ঞান
ভাষাতত্ত্ব নৃবিজ্ঞান

 

 

নৃতাত্ত্বিক তত্ত্ব নিয়ে বিস্তারিত ঃ

 

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment