আজকে আমরা আলোচনা করবো অর্থনৈতিক নৃবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু এবং গুরুত্ব নিয়ে। আমরা যখনই আর্থব্যবস্থার কথা ভাবি তখনই কতকগুলো ধারণা আমাদের মাথায় কাজ করে। সেইগুলির বাইরে আর কোন কিছুকে সাধারণত আমরা অর্থনৈতিক বিষয় হিসেবে ভাবি না।
অর্থনৈতিক নৃবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু এবং গুরুত্ব
আমাদের সাধারণ ভাবনার মূল বিষয়গুলো প্রচলিত অর্থশাস্ত্র (Economics) হতে এসেছে। আপনারা সকলেই জানেন যে লেখাপড়ার জগতে জ্ঞানকান্ড হিসেবে অর্থশাস্ত্র বা অর্থনীতি অনেক পুরোনো। পক্ষান্তরে নৃবিজ্ঞান অনেক নবীন জ্ঞানকান্ড। প্রচলিত অর্থশাস্ত্রে মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে যেভাবে আলাপ-আলোচনা এবং ব্যাখ্যা দেয়া হয়ে থাকে তা নৃবিজ্ঞানের চর্চায় যথেষ্ট বলে মনে হয়নি।
ফলে নৃবিজ্ঞানীদের গবেষণা এবং অধ্যয়নে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সম্পর্কে স্বতন্ত্র এবং বিশিষ্ট ভাবনা-চিন্তা উঠে এসেছে। এখানে সংক্ষেপে বলে রাখা যায়: নৃবিজ্ঞানের যে শাখায় সমাজের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে আলাপ-আলোচনা এবং গবেষণা করা হয়ে থাকে তাকে অর্থনৈতিক- নৃবিজ্ঞান বলা হয়ে থাকে।
তবে গোড়াতেই একটা বিষয়ে সতর্ক থাকা দরকার। তা হচ্ছে: নৃবিজ্ঞানে অর্থনৈতিক প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনার সঙ্গে সঙ্গেই ‘অর্থনৈতিক- নৃবিজ্ঞান’ শাখাটি দাঁড়িয়ে যায়নি। বরং বেশ কিছুকাল গবেষণা কাজের পর ‘অর্থনৈতিক- নৃবিজ্ঞান’ নামের এই শাখাটি পরিচিত হয়েছে।
অর্থনৈতিক নৃবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু এবং গুরুত্ব অধ্যায়ের সারাংশ:
আজকের আলোচনার বিষয় অর্থনৈতিক নৃবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু এবং গুরুত্ব অধ্যায়ের সারাংশ – যা অর্থনৈতিক নৃবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু এর অর্ন্তভুক্ত, নৃবিজ্ঞানীদের- চিন্তা- -ভাবনায় সকল সমাজেই অর্থনৈতিক কর্মকান্ড রয়েছে। এই চিন্তা থেকে তাঁরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের সমাজের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে গবেষণা করতে শুরু করেছিলেন।
নৃবিজ্ঞানের এই শাখাকে অনেকেই অর্থনৈতিক নৃবিজ্ঞান বলে থাকেন। এখানে কোন সমাজের উৎপাদন ব্যবস্থা নিয়ে -চিন্তা করা হয়। উৎপাদনের সাথে সাথেই কটন এবং ভোগের ধারণা চলে এসেছে। সেই সাথে ভাবনা-সমাজের নানা নিয়ম-কানুন। এই কাজে নৃবিজ্ঞানীদের মধ্যে একটা বিতর্ক দেখা দেয়।
তা হচ্ছে: অর্থশাস্ত্রের প্রচলিত তত্ত্ব শিল্পভিত্তিক ইউরোপীয় পুঁজিবাদী সমাজের বাইরের সমাজের জন্য প্রযোজ্য কিনা। এই তর্ককে প্রথাবাদী-বাস্তববাদী বিতর্ক হিসেবে বলা হয়ে থাকে। মার্ক্সবাদী ধারা সবসময়েই স্বতন্ত্র ছিল। সেই ধারার গুরুত্বের জায়গা হচ্ছে শ্রম এবং মানুষের সম্পর্ক। বর্তমান কালে ভোগ্যপণ্য এবং বিশেষভাবে স্বচ্ছল শ্রেণীর ক্রেতা-আচরণ গবেষণার জায়গা হতে পারে। কিন্তু প্রথাগত অৰ্থনৈতিক নৃবিজ্ঞানের চিন্তা-ভাবনা দিয়ে তা সম্ভব হবে না।
আরও দেখুনঃ