Site icon Anthropology Gurukul [ নৃবিজ্ঞান গুরুকুল ] GOLN

অজাচার সম্বন্ধে লেভি-স্ট্রসের ব্যাখ্যা

অজাচার সম্বন্ধে লেভি-স্ট্রসের ব্যাখ্যা

অজাচার সম্বন্ধে লেভি-স্ট্রসের ব্যাখ্যা

আজকের আলোচনার বিষয় অজাচার সম্বন্ধে লেভি-স্ট্রসের ব্যাখ্যা – যা  বিয়ে অজাচার এর অর্ন্তভুক্ত, লেভি-স্ট্রস তাঁর দি এলিমেন্টারি স্ট্রাকচারস অফ কিনশিপ (১৯৬৯) গ্রন্থে, টায়লরের মূলনীতি ধরে এগোন। টায়লর বলেছিলেন, আদিম সমাজে অজাচার নিষেধাজ্ঞা বিবাহ-প্রথার সাথে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত।

টায়লরের নীতি হল: “হয় বহির্গোত্রে বিয়ে কর অন্যথায় বহির্গোত্র দ্বারা খুন হও”। লেভি-স্ট্রস যদিও বিবাহ নিষেধাজ্ঞা এবং অজাচার-নিষেধাজ্ঞা, এই দুইয়ের মধ্যে তফাৎ টানছেন, তিনি টায়লরের মতই এ ধারণার প্রবক্তা যে, একটি অপরটির সাথে যুক্ত। তার মতে, অজাচার নিষেধাজ্ঞা একই সাথে প্রাকৃতিক (natural) এবং সাংস্কৃতিক (cultural)।

 

অজাচার সম্বন্ধে লেভি-স্ট্রসের ব্যাখ্যা

প্রাকৃতিক, কারণ এই নিষেধাজ্ঞা বিশ্বজনীন। আবার সাংস্কৃতিক, কারণ এটা শুধুমাত্র নিয়ম না, এই নিয়ম এক সমাজ হতে আরেক সমাজে ভিন্ন। লেভি-স্ট্রসের মতে, এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে লুকিয়ে আছে মনুষ্য সমাজ ও সংস্কৃতির চাবিকাঠি। চাবিকাঠি এই অর্থে যে, পরিবারের ভিতরে বিয়ে করা যদি অজাচার (নিষিদ্ধ) হয়, তার অর্থ পরিবারের বাইরে বিয়ে করা বাঞ্ছনীয়। একটি দলের অপর দলের সাথে নারী বিনিময় (exchange of women) সৃষ্টি করে মনুষ্য সমাজের মধ্যেকার আদান-প্রদানের ব্যবস্থা (system of reciprocity)।

এই আদান-প্রদানের ব্যবস্থার সাহায্যে সমাজ ও সংস্কৃতির উদ্ভব ঘটে যার মূলে রয়েছে যোগাযোগ এবং বিনিময়। লেভি-স্ট্রসের ভাষায়, “the incest prohibition expresses the transition from the natural fact of consanguinity to the cultural fact of alliance” (face করা একটি প্রাকৃতিক সত্য। বিবাহের মাধ্যমে মৈত্রী স্থাপন করা একটি সাংস্কৃতিক সত্য। অজাচার নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে প্রকাশ পায় এক ধাপ হতে আরেক ধাপে উত্তরণ)। লেভি-স্ট্রস অজাচার সমস্যার আলোচনার সূত্র ধরেই মনুষ্য সমাজ কি কি ধরনের মৈত্রীবন্ধন স্থাপন করে, এই আলোচনায় চলে যান।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

এ সম্পর্কে আপনারা ২ নং ইউনিটের ৫ নং পাঠে জেনে এসেছেন। কিন্তু লেভি-স্ট্রসের তত্ত্বও একই সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে: যৌন সম্পর্ক এবং বিবাহ সম্পর্ক, এ দুটো এক জিনিস নয়, এবং যেহেতু এ দুটো একই জিনিস নয় সে কারণে একটার সাহায্যে আরেকটার ব্যাখ্যা করা সম্ভব না।

 

 

এর আগের পাঠ (৪ নং ইউনিটের ১ নম্বর পাঠ), যেটা বিয়ে সংক্রান্ত, তাতে উল্লেখ্য করা হয়েছে, সাম্প্রতিককালের নৃবিজ্ঞানীরা তাঁদের গবেষণা কাজে এবং লেখালেখিতে বিয়ের কোন সর্বজনীন সংজ্ঞা খোঁজার পরিবর্তে ঐতিহাসিক নির্দিষ্টতার ওপর জোর দিচ্ছেন। ঠিক একইভাবে, অজাচার বিষয়ে যাঁরা বর্তমানে কাজ করছেন, তাঁরাও অজাচারের বিশ্বজনীন উৎসের সন্ধান না করে, নির্দিষ্ট সমাজে, নির্দিষ্ট সময়কালে অজাচার বলতে কি বোঝায়, কিভাবে ঘটে থাকে, এসব বিষয়াদি নিয়ে কাজ করছেন।

আরও দেখুনঃ

Exit mobile version