আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় সিজারের একনায়কত্ব। জুলিয়াস সিজার ছিলেন রোম সাম্রাজ্যের একজন সেনাপতি এবং একনায়ক; এছাড়া লাতিন ভাষায় রচিত তার লেখা গদ্যসাহিত্যও উল্লেখের দাবি রাখে। তাঁকে ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে একজন বলে বিবেচনা করা হয়। যে সমস্ত ঘটনার ফলে তার সমসাময়িক ও ঠিক তার পরবর্তী যুগে রোমের প্রশাসনিক চরিত্রে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয় ও রোম একটি গণতন্ত্র থেকে একটি একনায়ককেন্দ্রিক সাম্রাজ্যে পরিণত হয়, সেইসমস্ত ঘটনায় জুলিয়াস সিজারের ভূমিকা ছিল যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য।”এলাম দেখলাম জয় করলাম”এটি ছিলো জুলিয়াসের বানী।অবাক করা বিষয় রোমান সভ্যতা নদী মাতৃক ছিলো না।
৪৯ খ্রীষ্টপূর্বাব্দের শেষপর্যন্ত তিনি রোমের একনায়ক ছিলেন; ৪৭ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ থেকে ৪৬ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে প্রায় দশ বছরের দায়িত্বে এবং ৪৪ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ অনন্ত একনায়কত্ব হিসেবে।
সিজারের একনায়কত্ব
সীজারের একনায়কত্ব
পম্পির বিরুদ্ধে যুদ্ধের অবসানের পর সীজার রোমান সাম্রাজ্যের একচ্ছত্র অধিপতি হলেন। পূর্বেই তাঁকে দশ বছরের জন্য রোমের একনায়ক নিযুক্ত করা হয়েছিল। এখন থেকে তিনি রোমের আজীবন একনায়ক নিযুক্ত হলেন। অপরিসীম ক্ষমতার অধিকারী হলেন সীজার। গণপরিষদের আর কোনও ক্ষমতা রইল না এবং সিনেটও সীজারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হল।
সীজারের একনায়কত্বের কালে রোমে কতগুলি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সাধিত হয়েছিল। প্রথমত, স্পেন ও গলবাসীদেরকে রোমান নাগরিকের অধিকার দান করে তিনি বহুদিনের একটি মৌলিক সমস্যার সমাধান করেন। দ্বিতীয়ত, দরিদ্র বেকার শহরবাসীদের তিনি ইতালি ও রোমের অন্যান্য প্রদেশে অব্যবহৃত সরকারি জমিতে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেন।

তৃতীয়ত, গ্রীক জ্যোতির্বিদদের সাহায্যে তিনি প্রচলিত ক্যালেণ্ডারের সংস্কার সাধন করেন। ৩৬৫ দিনে এক বছর এবং প্রতি চার বছরের সাথে একদিন অতিরিক্ত যোগ করে তিনি যে ক্যালেণ্ডার প্রবর্তন করেন, তা ঈষৎ পরিবর্তনসহ (১৫৮২ খ্রিস্টাব্দে পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরী কর্তৃক যে পরিবর্তন সাধিত হয়) অদ্যাবধি প্রচলিত রয়েছে। তা ছাড়া রোমান আইনের সংস্কার সাধনেও তিনি সচেষ্ট হন।
কিন্তু সীজারের রাজনৈতিক কার্যকলাপ তাঁর শত্রুদের মধ্যে এমন ধারণার সৃষ্টি করেছিল যে, তিনি রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে উদ্যত হয়েছেন। তাঁরা সীজারের এ কার্যে বাধাদানের উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন।
খ্রিস্টপূর্ব ৪৪ অব্দের ১৫ই মার্চ সিনেটের অধিবেশন চলাকালে সীজার এ ষড়যন্ত্রের দুজন মূল কর্ণধার ব্রুটাস ও ক্যাসিয়াস কর্তৃক ছুরিকাঘাতে নিহত হন।
আরও দেখুন :