Site icon Anthropology Gurukul [ নৃবিজ্ঞান গুরুকুল ] GOLN

৯৫ এর সার আন্দোলন

৯৫ এর সার আন্দোলন

৯৫ এর সার আন্দোলন

আজকের আলোচনার বিষয় ৯৫ এর সার আন্দোলন – যা বাংলাদেশে কৃষক আন্দোলন এর অর্ন্তভুক্ত, আধুনিক রাষ্ট্রের আধুনিক ব্যবস্থায় কৃষকের উৎপাদনের অনেক কিছুই বাজারের সঙ্গে যুক্ত। কৃষি ক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তি আসার কারণে জমির সঙ্গে কৃষকের সম্পর্ক বদলে গেছে। এখন সার, কিটনাশক, কৃত্রিম সেচ ছাড়া জমিতে ফসল ফলানো যায় না।

দীর্ঘ দিন ধরে জমি হতে দেশজ ফসলের বীজ সরিয়ে কৃত্রিম বীজ চালু করার কারণেই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। আর এই প্রচলনের জন্য রাষ্ট্র ভূমিকা পালন করেছে। এই বদলগুলো ঘটানো হয়েছে উচ্চ ফলনের নামে। বীজ ও সার, কিটনাশক, সেচের সরঞ্জাম ইত্যাদির ব্যবসা বিদেশী কোম্পানিগুলোর হাতে। তারা সর্বক্ষণই এর প্রচার চালিয়েছে এবং গরিব দেশের সরকারকে এগুলো গ্রহণ করতে প্রভাবিত করেছে।

৯৫ এর সার আন্দোলন

 

 

বাংলাদেশ এরকম একটি দেশ। বাস্তবে ফসল বেশি হলেও কৃষকের জীবনের যে পরিবর্তন ঘটেনি, বরং আরো নাজুক হয়েছে তা উপরের আলোচনাতেই দেখা যায়। কিন্তু কৃষক নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন অনেক কিছুর উপর। এরকম একটি দ্রব্য হচ্ছে সার। চাষের মৌসুমে চাষীর এটা লাগবেই। ফলে সারের বাজারের সঙ্গে চাষীর জীবন ওতোপ্রোতভাবে জড়িত।

বিশেষভাবে ছোট চাষী এবং বর্গাচাষীদের জন্য এটা একটা কঠিন পরিস্থিতি যেহেতু তাঁদের হাতে নগদ পয়সা থাকে কম। আর সারের দাম বেশি হলে তাঁদের ক্ষতির পরিমাণও বেড়ে যায়। এই পরিস্থিতির সুযোগ প্রায়শই সার ব্যবসায়ীরা নিয়ে থাকেন। তাঁরা চাষের মৌসুমে প্রয়োজনীয় সারের কৃত্রিম টানাটানি বাধিয়ে দেন কখনো। এর মাধ্যমে সারের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

অথবা অন্য কোন কারণে চাষীদের অবস্থাকে আরো দুর্দশাগ্রস্ত বানিয়ে দেয়া যায়। বড় জমির মালিকদের এই সংকটে পড়ার কোন কারণই নেই। প্রথমত তাঁদের উদ্বৃত্ত থাকে, দ্বিতীয়ত তাঁরা সাধারণত জমি বর্গা দিয়ে থাকেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই প্রত্যক্ষভাবে সারের ব্যবসায়ী। ‘৯৫ সালে এই রকম একটা পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল। ক্ষুদ্র এবং বর্গাচাষীরা তাঁদের জমিতে চাষের মৌসুমে চাষ শুরু করতে পারছিলেন না। অথচ তাঁরা জানতেন যে সারের মজুদ আছে। এই পর্যায়ে তাঁরা ন্যায্যমূল্যে সারের দাবীতে বিক্ষোভ শুরু করেন বিভিন্ন অঞ্চলে। ক্রমশ এটা ছড়িয়ে পড়ে ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর সহ বিভিন্ন অঞ্চলে।

 

 

অনেক জায়গায় কৃষকেরা সারের গুদাম হতে সার বের করবার চেষ্টাও করেন। তাঁদের এই আন্দোলন দমন করবার জন্য চিরাচরিতভাবে পুলিশ মোতায়েন করে সরকার ও সার ব্যবসায়ীগণ। পত্র পত্রিকায় জানা যায় ১৫ থেকে ২০ জন চাষীকে গুলি করে মেরে ফেলে পুলিশ। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে কতজন চাষী মারা গেছেন সার চাইতে গিয়ে তার সঠিক হিসাব পাওয়া মুশকিল।

আরও দেখুনঃ

Exit mobile version