Site icon Anthropology Gurukul [ নৃবিজ্ঞান গুরুকুল ] GOLN

আসিরীয় সাম্রাজ্য

আসিরীয় সাম্রাজ্য

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় আসিরীয় সাম্রাজ্য। অ্যাসিরীয়া ছিলো প্রাচীন নিকট প্রাচ্যের একটি প্রধান সেমিটিক রাজত্ব বা সাম্রাজ্য, যার আকৃতি প্রায় উনিশ শতাব্দী ধরে বা আনুমানিকভাবে খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ বা ২৫০০ অব্দ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ৬০৫ অব্দ পর্যন্ত পরিবর্তীত হয়েছে, এবং স্থায়ীত্ব ছিলো প্রারম্ভিক ব্রোঞ্জ যুগ থেকে শেষ লৌহ যুগ পর্যন্ত। উত্তর মেসোপটেমিয়ায় টাইগ্রিস নদীর উজানে কেন্দ্রীভূত অসিরীয়া বেশ কয়েকবার শক্তিশালী সাম্রাজ্য হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। অ্যাসিরীয়া তার সময়ে মূল সূতিকাগার হিসেবে বৃহত্তর মেসোপটেমিয় “সভ্যতার ঊষালগ্নে” প্রযুক্তিগত, বৈজ্ঞানিক এবং সাংস্কৃতিক সাফল্যের শীর্ষ স্থানে অসীন ছিল।

 

আসিরীয় সাম্রাজ্য

 

 

আশুর শহরটি অন্যান্য অ্যাসিরীয়ান শহরগুলির সাথে খ্রিস্টপূর্ব ২৬০০ অব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বলে মনে করা হয়। খুব সম্ভবত এটি সুমেরীয়-শাসনাধীন প্রশাসনিক কেন্দ্রগুলির মধ্যে একটি ছিল।

অ্যাসিরীয়ায় প্রাপ্ত সর্বপ্রথম দিকের নব্যপ্রস্তরযুগের নিদর্শন হলো খ্রিস্টপূর্ব ৭১০০ অব্দের জার্মো সংস্কৃতির এবং আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৬০০০ অব্দের হাসুনা সংস্কৃতির হাসুনা বসতি।

 

আসিরীয় সাম্রাজ্য

৩০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে একটি সেমিটিক ভাষাভাষী দল উত্তর মেসোপটেমিয়ার আসুর নামক নগররাষ্ট্রে একটি ক্ষুদ্র রাজ্য স্থাপন করে। এরাই কালক্রমে আসিরীয় নামে পরিচিত হয়। টাইগ্রিস-ইউফ্রেটিস অববাহিকায় তাদের আধিপত্য বিস্তার মেসোপটেমীয় সভ্যতার তৃতীয় পর্যায়ে উত্তরণের সূচনা করে।

আসিরীয় শক্তির বিকাশ ঘটতে শুরু করে ১৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে এবং তার অল্পকালের মধ্যেই তারা সমগ্র উত্তর মেসোপটেমিয়ার কর্তৃত্ব অর্জন করে। খ্রিস্টপূর্ব দশম শতাব্দীর দিকে তারা ব্যবিলনিয়া থেকে অবশিষ্ট কাসাইট শক্তিকে উৎখাত করে। আসিরীয় সাম্রাজ্যের পরিপুর্ণ বিস্তৃতি ঘটে খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম ও সপ্তম শতাব্দীতে। ‘৩য় তিগলাথ পিলেসার’ (৭৪৫-৭২৭ খৃিঃপূঃ) অনেকগুলো সফল অভিযান পরিচালনা করেন।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

তিনি সিরিয়া ও ফিনিশিয়া অধিকার করেন উরারতু রাজ্যকে পরাজিত করে। টায়ার ও ইসরায়েলের রাজারা তাঁকে কর প্রদানে স্বীকৃত হন। সবশেষে তিনি ব্যবিলনিয়া পুরোপুরি জয় করে নেন। পরবর্তী সম্রাটগণের, যথা, ২য় সারগান (৭২২-৭০৫ খৃিঃপূঃ), সেনাচেরিব (৭০৫-৬৮৯ খ্রিঃ পূঃ), এসারহাদন (৬৮০-৬৬৯ খৃঃপূঃ) এবং আসুরবানিপাল (৬৬৮-৬২৬ খৃঃপূঃ)-এর আমলেও আসিরীয়দের বিজয় অভিযান অব্যাহত থাকে।

এ ভাবে আসিরিয়া রাষ্ট্র এশিয়া মাইনরের মধ্য ও পূর্ব অংশ, মেসোপটেমিয়া, সিরিয়া, ফিনিশিয়া, ইসরায়েল ও মিশরের একাংশ স্বকবলিত করে এক বিশাল সামরিক শক্তিতে পরিণত হয়। সেকালের হিসেবে আসিরিয়া নিঃসন্দেহে এক বিশ্বশক্তিতে পরিণত হয়েছিল। সেনাচেরিব-এর আমল থেকে আসিরিয়ার রাজধানী ছিল নিনেভে নগরী।

আসিরিয়া ছিল সমরনায়ক ও দাসমালিক পরিচালিত রাষ্ট্র। মিশর বা ব্যবিলনিয়ার চেয়ে এখানে দাসপ্রথা অনেক বেশি বিকাশ লাভ করেছিল। আসিরিয়ার সম্রাটের আজ্ঞাধীন শত সহস্র দাস ছিল— যাদের রাস্তা তৈরি, খাল খনন, এমনকি পুরো নগরনির্মাণের কাজে নিয়োগ করা হত।

 

আসিরীয়গণ একটি দুর্গকে আক্রমণ করছে।

আরও দেখুন :

Exit mobile version