Site icon Anthropology Gurukul [ নৃবিজ্ঞান গুরুকুল ] GOLN

বাংলাদেশে কৃষক আন্দোলন

বাংলাদেশে কৃষক আন্দোলন

বাংলাদেশে কৃষক আন্দোলন

আজকে আমরা আলোচনা করবো বাংলাদেশে কৃষক আন্দোলন নিয়ে। কৃষক আর্থব্যবস্থা অংশে আপনারা জেনেছেন যে নৃবিজ্ঞানীদের অনেকেই কৃষকদের কর্মকান্ডকে একটা স্বতন্ত্র বিষয় হিসেবে দেখতে চেয়েছেন । এই পদ্ধতিতে ভাবার একটা বিরাট সমস্যা আছে। প্রথমত মনে রাখা দরকার আমরা যে অর্থে কৃষক বলে থাকি সারা পৃথিবীতে সেই রকম কৃষক নেই। শিল্পোন্নত বিশ্বে কৃষকরা আর মোটেই সেরকম নন। দ্বিতীয়ত অন্যান্য অংশের কৃষকরা কোনভাবেই এক জায়গায় স্থির নেই। আমাদের সতর্ক থাকা দরকার যে কৃষক সম্পর্কিত ভাবনা চিন্তায় অনেক সময়েই কৃষকদের অপরিবর্তনশীল ধরে নেয়া হয়।

ধরে নেয়া হয়েছে যে কৃষকদের মধ্যে তেমন কোন পরিবর্তন হচ্ছে না। সে কারণেই এই আলোচনার শুরুতেই আমাদের বোঝা দরকার সারা পৃথিবীতে কৃষকদের জীবনে নানা রকম পরিবর্তন হচ্ছে কখনো প্রযুক্তি আসার কারণে, কখনো সরকারী নীতিমালার কারণে, কখনো আন্তর্জাতিক বাজারের চাপে। বাংলাদেশের কৃষক আন্দোলন বুঝবার জন্য এই অঞ্চলের কৃষকদের বৈশিষ্ট্য বোঝা দরকার। আর তাহলে এখানকার কৃষিজ সম্পর্কের ইতিহাস খানিকটা জানা দরকার।

বাংলাদেশে কৃষক আন্দোলন

 

বাংলাদেশে কৃষক আন্দোলন

 

ব্রিটিশরা এখানে আসবার আগে পর্যন্ত এই অঞ্চলে জমির কোন ব্যক্তিগত মালিকানা ছিল না। এর মানে এই নয় যে তখন সমাজে সমতা ছিল। ক্রিস ফুলারের বক্তব্য হচ্ছে মোঘল সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক অধিকার সৃষ্টি এবং সেগুলোকে টিকিয়ে রাখা কৃষিজ ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। বিষয়গুলোকে তিনি এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন : প্রাক-ব্রিটিশ ভারতের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কেন্দ্রে ছিল জমির উপর নিয়নত্রণ। কিন্তু আসলে ঠিক তাও নয়। যেটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেটি হচ্ছে জমিতে উৎপাদিত শস্যাদির উপর নিয়ন্ত্রণ। রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ছিল জমিতে বসবাসরত মানুষের উপর নিয়ন্ত্রণ। নির্দিষ্ট কোন জমিতে উৎপাদিত শস্যের ভাগীদার ছিল একাধিক ব্যক্তি কিংবা সমষ্টি, শাসক হতে একেবারে কৃষক পর্যায় পর্যন্ত।

শস্য উৎপাদনের জন্যে কৃষকের শ্রম স্পষ্টতই অপরিহার্য। কেবল তাই নয়, সে সময়ের ভারতবর্ষের জনসংখ্যা ছিল কম এবং সে তুলনায় জমি ছিল অত্যাধিক। নিয়মিত ফসলের হিস্যা আদায় করার লক্ষ্যে কৃষককে জমিতে বসবাসরত রাখা ছিল শাসকবৃন্দের স্বার্থ। মোঘল সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক স্তরবিন্যস্ত ব্যবস্থা ছিল একটি বিশাল পিরামিডের মতন: পিরামিডের সর্বনিম্নে অবস্থিত ছিলেন রায়ত বা কৃষক, তার উপর ছিলেন জমিদার, তার উপরে প্রধান কিংবা দলপতি, তারও উপর মানসাবদার, তার উপর জায়গীরদার এবং আর্থ-রাজনৈতিক ব্যবস্থার চূড়ায় ছিলেন স্বয়ং মোঘল সম্রাট।

সম্রাট হতে জমিদার, প্রতিটি ব্যক্তি এবং সমষ্টি ততক্ষণই ক্ষমতাবান যতক্ষণ তিনি অধিবাসীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন এবং জমি হতে শস্যের ভাগ আদায় করতে পারছেন। শস্যের ভাগ আদায় করতে না পারলে রাজনৈতিক স্তরবিন্যস্ত ব্যবস্থার বিভিন্ন পর্যায়ে সিপাহীসালা, অথবা অস্ত্র, কোনটাই মজুদ রাখা সম্ভব ছিল না যেটি কিনা মোঘল সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখার প্রধান উপায় ছিল ।

মোঘল সাম্রাজ্যের গ্রামগুলো ছিল দুই ধরনের : রায়তওয়ারী এবং জমিদারী। জমিদার শ্রেণী রায়ত কিংবা কৃষক শ্রেণীর এক ধাপ উর্দ্ধে অবস্থিত; তাদের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অধিকার ছিল কৃষকের উৎপাদিত ফসলের একটি ভাগ। জমির মালিকানার অর্থ সে কালে জমি ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষমতা বোঝাত না, বোঝাত জমিদারীতে বসবাসরত মানুষ এবং তাদের উৎপাদিত ফসলের হিস্যার উপর অধিকার। গ্রাম গড়ে উঠত এভাবে : একটি জাতিবর্ণ কিংবা গোত্রের সদস্যগণ গ্রামের পুরনো অধিবাসীদের উপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করত, অথবা তারা কোন খালি জায়গাকে বাসযোগ্য করে তুলত। যদি প্রথমটা ঘটত তাহলে সৃষ্ট হ’ত জমিদারী গ্রাম । দ্বিতীয়টা ঘটলে সৃষ্ট হ’ত রায়তওয়ারী গ্রাম যেহেতু তারা নিজেরাই রায়তী কিংবা কৃষক।

অর্থাৎ, রায়তওয়ারী গ্রাম হচ্ছে জমিদার-বিহীন গ্রাম। কালানুক্রমে সে গ্রামে যদি অন্য কোন গোত্রের উদ্ভব ঘটত, এবং নতুন গোত্র পুরানদের উপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে পারত অথবা হেরে যেত, তাহলে জমিদারী গ্রাম প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা তৈরী হ’ত। একেবারে প্রথমে না হলেও পরবর্তী কোন এক পর্যায়ে, বিজয়ী গোত্র কিংবা জাতিবর্ণের অধিকার পরিণত হতে পারত জমিদারী অধিকারে।

অধিকৃত এলাকার বিভিন্ন অঞ্চলের জমিদারীর অধিকার বিজয়ী গোত্রের বিভিন্ন নেতৃত্বদানকারী সদস্যদের হাতে ন্যস্ত থাকত। জমিদারী অধিকার নিশ্চিত করবার জন্য বলপ্রয়োগ এবং শারীরিক / পেশী শক্তি ছিল অপরিহার্য। ক্রিস ফুলার বলেন : দুটি বিষয় মনে রাখা জরুরী। প্রথমত, জমিদারের উৎপত্তি প্রায় সবসময়ই হত কৃষক শ্রেণী হতে। একারণে তাদের মধ্যে কোন নিরঙ্কুশ পার্থক্য ছিল না। বরং ক্ষমতাকে যদি আমরা লাগাতার হিসেবে ভাবি তাহলে বলা যায় যে এক পক্ষের ক্ষমতা ছিল কিছুটা বেশী, পক্ষের কিছুটা কম। দ্বিতীয়ত, স্থানিক পর্যায়ে অধিপতি শ্রেণী চক্রাকারভাবে পরিবর্তিত হ’তে (circulation of elites ) ।

অপর বৃটিশ শাসন মোঘল কৃষি ব্যবস্থায় বড়-সড় রদবদল ঘটায়। ভারতবর্ষের যে কোন ভূখন্ড দখলের পর, নতুন শাসকদের প্রথম কাজ ছিল জমির খাজনা আদায় করা কিন্তু সেটির জন্য প্রয়োজন ছির জমির মালিক কে বা কারা সে ব্যাপার নিশ্চিত হওয়া। পূর্বতন খাজনা ব্যবস্থা বৃটিশদের বোধগম্যের বাইরে ছিল। বৃটিশরা জমির মালিক খুঁজছিলেন কিন্তু তারা জমির মালিক বলতে যা বুঝতেন সে অর্থে কোন মালিক ছিল না। পরে অবশ্য তারা মালিক পক্ষ “খুঁজে” বের করলেন এবং তাদের সঙ্গে একটি “মীমাংসা”য় পৌঁছালেন ঠিকই কারণ তাদের লক্ষ্য ছিল একটি স্থায়ী জমির মালিক শ্রেণী সৃষ্টি করা যারা হবেন বৃটিশ ক্ষমতার নির্ভরযোগ্য রাজনৈতিক মিত্র।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

বৃটিশ রাজস্ব ব্যবস্থার কেন্দ্রে ছিল ব্যক্তি মালিকানার ধারণা। বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসন ভারতবর্ষে কেবলমাত্র জমিতে ব্যক্তি মালিকানা সৃষ্টি করেনি, তারা তাদের প্রবর্তিত রাজস্ব ব্যবস্থা সমগ্র ভারতবর্ষে প্রয়োগ করেছে। সেটিকে আইন দ্বারা, চূড়ান্তভাবে বললে বৃটিশ ক্ষমতা দ্বারা, রক্ষা করেছে। বৃটিশ শাসকদের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে পুরাতন অধিপতিশীল শ্রেণী ধ্বংসপ্রাপ্ত হলো, এবং একটি নতুন অধিপতিশীল শ্রেণী তৈরী হ’ল।

নতুন এই আর্থ-রাজনৈতিক ব্যবস্থার চালিকাশক্তি পূর্বের ব্যবস্থার মত বলপ্রয়োগ-ভিত্তিক ছিল না, উৎপাদিত ফসলে ভাগ বসানোর ব্যাপারও ছিল না। নতুনটির কেন্দ্রে ছিল বাজার প্রতিযোগিতা। এটি সম্পত্তির ব্যক্তিগত মালিকানার ধারণা হতে গড়ে উঠেছিল। নতুন-সৃষ্ট ব্যবস্থায় উৎপাদিত ফসলের ভাগাভাগির পরিবর্তে গড়ে উঠে একটি নতুন লক্ষ্য : বাজার ব্যবস্থা মোতাবেক জমি-সংগ্রহ।

উপরের আলোচনার বিষয়বস্তুকে বিবেচনা করলে দেখা যায় যে সাধারণ কৃষকদের আন্দোলন ব্রিটিশ আমলের আগে ছিল প্রধানত জমিদারদের বিপক্ষে। সেগুলির মূল লক্ষ্য ছিল নিজেদের জীবন যাপনের জন্য ন্যূনতম প্রয়োজনীয় সম্পদটুকু রাখা এবং নির্যাতন বন্ধ করা। ব্রিটিশ শাসনে এই পরিস্থিতিটা পুরো পাল্টে যায়। কৃষক আন্দোলনের মূল লক্ষ্য এক থাকলেও কৃষকদের প্রতিপক্ষ অনেক বদলে যায়। আর কৃষকদের উপর নির্যাতনের ধরনও অনেক জটিল হয়ে পড়ে। এখানে আমাদের কয়েকটি ব্যাপার খুবই মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করবার প্রয়োজন আছে। ব্রিটিশ ভারতে প্রথম জমির মালিকানার ধরন আমূল বদলে গেল।

১৭৯৩ সালে লর্ড কর্নওয়ালিশ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রথা চালু করলেন। এর মাধ্যমে বাস্তবে চিরস্থায়ী জমিদার তৈরি হ’ল। ফলে কৃষকদের পক্ষে কোন জমিদারকে উচ্ছেদ করবার বাস্তব কোন মানে থাকল না। কারণ ইতোমধ্যেই কোর্ট কাচারী ও আইনের মাধ্যমে জমির উপর চিরস্থায়ী মালিকানাকে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। অর্থাৎ কোন জমিদারের শোষণে অতিষ্ট হয়ে তাঁকে হঠালেও সেই জমিদারের আইনগত ওয়ারিশ পরবর্তী জমিদার হয়ে যাবে। উপরন্তু মোঘল ভারতে জমির উপর কৃষকদের যে হক স্বীকৃত ছিল তাও আর রইল না। আরও কিছু মৌলিক বদল ঘটেছে।

আগে বিভিন্ন অঞ্চল বা পরগণাতে কার্যত বিভিন্ন রকম নিয়ম এবং ব্যবস্থা ছিল। সেটা চাষের চুক্তি বা ফসলের হিস্যা যাই হোক না কেন । ব্রিটিশ আমলে সমগ্র ভারতের জন্য একটা অখন্ড আইনী ব্যবস্থা চালু হ’ল। ফলে কৃষকদের লড়াই বা আন্দোলনের মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়াল খোদ আইনী ব্যবস্থার বিপক্ষে। এর অন্য কারণও আছে।

মোঘল যুগে আইনী কাঠামো ছিল কৃষি নিয়ে। সেগুলোর নাম ছিল বাদশাহী ফরমান। কিন্তু ব্রিটিশ আমলে আইনের শক্তিমত্তা অনেক বেড়ে গেছিল নয়া পদ্ধতির বিচার কাঠামোর কারণে এবং একটা অখন্ড ব্যবস্থা সমস্ত ভারতের জন্য কায়েম হয়েছিল বলে। তাছাড়া সেই আইনকে রক্ষা করার জন্য শক্তিশালী পুলিশ বাহিনী নিয়োগ হয়েছিল। এই নতুন ব্যবস্থাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আগে সাধারণ কৃষকদের সংগ্রাম পরিচালনা করতে হ’ত জমিদারদের বিরুদ্ধে এবং লড়াই হ’ত লাঠিয়ালদের বিপক্ষে। ব্রিটিশ ভারতে তা বদলে গিয়ে হ’ল আইন এবং পুলিশের বিপক্ষে। অন্য ভাষায় বললে রাষ্ট্রের সাথে ।

চিরস্থায়ী জমিদাররা যেহেতু ব্রিটিশ শাসকদের স্বার্থের অনুকূল ছিল তাই তাদের রক্ষা করবার জন্য ব্রিটিশ রাজ এবং পুলিশ বাহিনী সর্বাত্মক চেষ্টা চালাত। কৃষক আন্দোলনের লিখিত ইতিহাস থেকে জানা যায় এই সময়কালে একাধিক বড় মাপের কৃষক আন্দোলন হয়েছিল। এর মধ্যে এই শতকের তেভাগা এবং তেলেঙ্গানা সংগ্রামের স্বতন্ত্র গুরুত্ব আছে। এখানে আরও একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। এই শতকের বিশের দশক থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে কমিউনিস্ট রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠা ঘটে। এর কার্যক্রম ছিল সমগ্র ভারতবর্ষ ব্যাপী কৃষক ও নিম্নশ্রেণীর মানুষজনের আন্দোলনকে সংগঠিত করা।

 

বাংলাদেশে কৃষক আন্দোলন

 

তাতে করে নানান স্থানে বেড়ে ওঠা আন্দোলনগুলির মধ্যে একটা যোগসূত্র তৈরি হতে থাকল। যদিও কৃষক আন্দোলনের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন হয়নি কিন্তু এই আন্দোলনগুলির বিরাট গুরুত্ব এই কারণে যে সেগুলি কৃষকদের জীবনকে বদলে দেবার উদ্দেশ্য নিয়ে গড়ে উঠেছিল। তেভাগা আন্দোলন বাংলা অঞ্চলেই মূলত বেড়ে উঠেছিল। এখানে সংক্ষিপ্ত আকারে সেই আন্দোলন এবং সাম্প্রতিক কালের দুটি আন্দোলন নিয়ে টীকা দেয়া হচ্ছে।

 

 

আজকের আলোচনার বিষয় বাংলাদেশে কৃষক আন্দোলন অধ্যায়ের সারাংশ – যা বাংলাদেশে কৃষক -আন্দোলন এর অর্ন্তভুক্ত, বাংলা অঞ্চলের কৃষক-কিষাণী বিভিন্ন সময়কালে নানান অত্যাচার ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। তবে ব্রিটিশরা এখানে আসবার পরে সেটার অর্থ বদলে যায়।

 

 

কারণ তার আগে পর্যন্ত এই অঞ্চলে জমির কোন ব্যক্তিগত মালিকানা ছিল না। এমনকি রায়তওয়ারী গ্রামগুলোতে জমিদারী শাসনও ছিল না। ব্রিটিশদের করা আইনে চিরস্থায়ী জমিদার সৃষ্টি হয়। এর বিরুদ্ধে কৃষকদের বিশাল আন্দোলন গড়ে ওঠে তেভাগা আন্দোলন নামে। জীবন বাজি রেখে লড়ে তাঁরা সেই আন্দোলনের কিছু দাবি আদায় করেন। কিন্তু কৃষক-কিষাণীর জীবনে খুব বড় বদল আসে না। সাম্প্রতিক কালেও নানা অঞ্চলে তাঁদের আন্দোলন- সংগ্রাম-লড়াই চলছে।

 

আরও দেখুনঃ

Exit mobile version