আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় রোমান আইন
রোমান আইন
রোমান আইন
বৈজ্ঞানিক হিসাবে রোমানগণ সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এর প্রধান কারণ আমরা পূর্বেই আলোচনা করেছি। দাসভিত্তিক অর্থনীতি ও দাসতান্ত্রিক ভাবাদর্শ রোমানদের মনে বিজ্ঞানচর্চার প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে কোনো সাড়াই জাগায়নি। এমনকি গ্রীকদের আবিষ্কৃত বিজ্ঞানকেও তারা কাজে লাগায়নি। দাস মালিকগণ দৈহিক পরিশ্রমকে ঘৃণার চক্ষে দেখত এবং উৎপাদনের সাথে সংযুক্ত সবকিছু, এমনকি ব্যবহারিক বিজ্ঞানও তাদের নিকট ছিল পরিত্যাজ্য।
অন্যদিকে উৎপাদনের কাজে নিযুক্ত ক্রীতদাসগণ সময় ও অনুপ্রেরণার অভাবে এ ব্যবহারিক বিজ্ঞানকে কাজে লাগাতে পারেনি। কারণ এগুলি তাদের পরিশ্রমের ভার কমাতে পারেনি। কাজেই রোমান যুগে কারিগরি ক্ষেত্রে কোনো আবিষ্কার ঘটলেও সেগুলি খেলনার সামগ্রীরূপে ফেলে রাখা হয়েছে। রোমান যুগে একমাত্র বিজ্ঞানচর্চা হয়েছে আলেকজান্দ্রিয়াতে, যেখানে আগের থেকেই বিজ্ঞান সাধনার ধারা অব্যাহত ছিল।
এ যুগের বিখ্যাত গ্রীক বৈজ্ঞানিক ছিলেন গ্যালেন (খৃষ্টীয় দ্বিতীয় শতক)। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তাঁর রচিত চিকিৎসা গ্ৰন্থ ষোল শতক পর্যন্ত মূল প্রামাণ্য গ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছিল। তাঁর গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ছিল রক্ত সঞ্চালন ক্রিয়া পদ্ধতি সম্পর্কে। এ শতাব্দীর আরেকজন বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক ক্লডিয়াস টলেমী। জ্যোতির্বিদ্যার উপর লিখিত তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ “আলমাজেস্ট” প্রাচীন জ্যোতির্বিদ্যার বিশ্বকোষ নামে পরিচিত।
সূর্য, চন্দ্র ও গ্রহের গতি, পৃথিবীর আহ্নিক গতি, দিবারাত্রি ও তার দীর্ঘতা, নক্ষত্রের উদয়াস্ত ইত্যাদি সম্বন্ধে তাঁর বিস্তারিত আলোচনা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে এ গ্রন্থটিতে। টলেমীর মতে, পৃথিবীকে কেন্দ্র করেই সূর্য পরিক্রমণ করে। পঞ্চদশ শতাব্দীতে কোপার্নিকাস ও ষোড়শ শতাব্দীতে গ্যালিলিও’র সূর্যকেন্দ্রিক মতবাদ আবিষ্কৃত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত টলেমীর মতবাদই নির্ভুল বলে পরিগণিত ছিল।
খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতাব্দীতে ডায়োফ্যান্টাস ছিলেন বিখ্যাত গণিতজ্ঞ। ডায়োফ্যান্টাসের পর প্যাপাস, থিওন অব আলেকজান্দ্রিয়া ও হাইপেসিয়ার নাম গণিতের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
থিওনের বিদুষী কন্যা হাইপেসিয়াকে নির্মমভাবে হত্যা করে খ্রিস্টান ধর্মান্ধ পাদরীগণ। এ পাদরীদের অন্যতম আর্চবিশপ থিওফেলাসের নির্দেশে ৩৯০ খ্রিস্টাব্দে আলেকজান্দ্রিয়ার বিশ্ববিখ্যাত গ্রন্থাগারের একটি বিরাট অংশ ধ্বংস করা হয়েছিল।
আরও দেখুন :