আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় ক্যালডীয় সংস্কৃতি। নব্য-ব্যাবিলনীয় সাম্রাজ্য বা দ্বিতীয় ব্যাবিলনীয় সাম্রাজ্য, হল মেসোপটেমিয়ার স্থানীয় রাজাদের দ্বারা শাসিত সর্বশেষ রাষ্ট্র। সাম্রাজ্যটি ঐতিহাসিকভাবে ক্যালডীয় সাম্রাজ্য নামে পরিচিত। ৬২৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ব্যাবিলনের রাজা হিসাবে নবোপোলাসারের রাজ্যাভিষেকের মাধ্যমে এবং ৬১২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে নব্য-অ্যাসিরীয় সাম্রাজ্যের পতনের মাধ্যমে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, আকিমিনীয় পারস্য সাম্রাজ্য ৫৩৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে নব্য-ব্যাবিলনীয় সাম্রাজ্য জয় করেছিল, যা প্রতিষ্ঠার এক শতাব্দীরও কম সময়ের মধ্যে ক্যালডীয় রাজবংশের পতনকে চিহ্নিত করে।
ক্যালডীয় সংস্কৃতি
ক্যালডীয় সংস্কৃতি
আসিরীয়দের পতনের পর মেসোপটেমিয়ায় ক্যালডীয়দের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ক্যালডীয় যুগই মেসোপটেমিয়ার প্রাচীন সভ্যতার সর্বশেষ পর্যায়। এ যুগকে ‘নব-ব্যবিলনীয় যুগ’ও বলা হয়ে থাকে। ক্যালডীয় যুগে বিজ্ঞানের বিশেষ বিকাশ ঘটেছিল। মেসোপটেমিয়ার ইতিহাসে ক্যালডীয় বিজ্ঞানীরা অতি উচ্চ স্থান অধিকার করে আছেন। ক্যালডীয় বিজ্ঞানীদের অবদান অবশ্য প্রধানত জ্যোতির্বিদ্যার ক্ষেত্রেই সীমিত রয়েছে।
সাতদিনে সপ্তাহ ধরার হিসেব এরাই প্রবর্তিত করেছিল। ক্যালডীয়রা একদিনকে ১২টি জোড়া-ঘন্টায় ভাগ করেছিল, প্রত্যেক জোড়া ঘন্টায় ছিল ১২০ মিনিট করে সময়।
আজ পর্যন্ত আমরা এই হিসাবই মেনে চলি। ক্যালডীয় জ্যোতির্বিদরা ৩৫০ বছর ধরে বিভিন্ন জ্যোতিষীর পর্যবেক্ষণ (যথা, গ্রহণ কাল ইত্যাদি) লিপিবদ্ধ করেছেন।
ক্যালডীয়দের-সাম্রাজ্যের পতনের পরও দীর্ঘকাল পর্যন্ত এ হিসেব রাখার কাজ অব্যাহত ছিল। ক্যালডীয়রা বছরের দৈর্ঘ্য প্রায় নিখুঁতভাবে নিরূপণ করতে পেরেছিল; এ হিসেবে মাত্র ২৬ মিনিটের ভুল ছিল।
ব্যাবিলন শহরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠায় ক্যালডীয় সভ্যতা ইতিহাসে ‘নতুন ব্যাবলনীয় সভ্যতা’ নামে পরিচিত। ক্যালডীয় সভ্যতার স্থপতি ছিলেন সম্রাট নেবুচাদনেজার। ‘ব্যাবিলনের শূন্যউদ্যান’ নির্মাণের জন্য তিনি অমর হয়ে আছেন। সম্রাট নেবুচাঁদ নেজারের সম্রাজ্ঞী বাগান করতে খুব পছন্দ করতেন। তাঁরই উৎসাহে সম্রাট নগর দেওয়ালের উপর তৈরি করলেন আশ্চর্য সুন্দর এক বাগান। ইতিহাসে যা ‘শূন্যউদ্যান’ নামে পরিচিত।
‘ব্যাবিলনের শূন্যউদ্যান’ প্রাচীন পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের একটি। ক্যালডেরীয়রাই প্রথম সপ্তাহকে ৭ দিনে বিভক্ত করে।আবার প্রতিদিনকে ১২ জোড়া ঘন্টায় ভাগ করার পদ্ধতি তারা বের করে। ক্যালডেরীয়রা ১২ টি নক্ষত্রপুঞ্জের সন্ধান পান। তা থেকে ১২ টি রাশিচক্রের সৃষ্টি হয়।
– ক্যালডীয় সভ্যতার অবদানঃ
– সভ্যতায় ক্যালডীয়দের সবচেয়ে বড় অবদান: ব্যাবিলনের শূন্য উদ্যান’ নির্মাণ (এটি বিশ্বের সপ্তাশ্চর্যের একটি)
– দিনকে ১২ জোড়া ঘণ্টায় ভাগ করেন। অর্থাৎ, ১দিনকে ২৪ ঘণ্টায় ভাগ করে।
– সপ্তাহকে ৭দিনে ভাগ
– বর্তমান অবস্থান: ইরাকে
নেবুচাদনেজারের রানী শখ করে রাজাকে একটি বাগান নির্মাণ করে দিতে বলেন। রানীর আবদার রাখতে রাজা নেবুচাদনেজার নগরীর চারদিকে যে দেয়াল ছিল তারই ছাদে তৈরি করেন বিশাল বাগান, এটিই এখন ‘ব্যাবিলনের শূন্য উদ্যান’ নামে পরিচিত। বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখায় খুব বেশি অবদান না রাখলেও জ্যোতির্বিজ্ঞানে তাদের অবদান অসামান্য।
আরও দেখুন :